দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ (যাদের বয়স ১৬ বছর তিন মাস থেকে ৪৬ বছর ৪ মাস পর্যন্ত) মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে নারী ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পুরুষ-৬ শতাংশ। আর দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশীদের করোনারী ধমনী রোগের (করোনারি আর্টারি ডিজিজ) প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘বিশ্ব হার্ট দিবস’ উপলক্ষ্যে কার্ডিওলজি বিভাগের একাডেমিক এন্ড রিসার্চ সেল ও ইউনিভার্সিটি কার্ডিয়াক সেন্টারের এক গবেষণায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তাফা জামান।
সেমিনারে বলা হয়, অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায়, এশিয়ার অন্য যে কোন দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়ে তুলনামুলক বেশি মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করছে। এ সংখ্যা বাংলাদেশে প্রতি এক লাখে ২০৩ দশমিক ৭ জন, শ্রীলংকায় ৮৪ দশমিক ৫ জন, পাকিস্তানে ২২২দশমিক ৯ জন, নেপালে ১৫২ দশমিক ৬ জন, মায়ানমার এ ১৬৪ দশমিক ৭ জন, মালদ্বীপে ৫০দশমিক ৯ জন, ভারতে ১৬৫ দশমিক ৮ জন, ভুটানে ২২১ দশমিক ৭ জন, আফগানিস্তানে ৩২৮দশমিক ৬ জন)। হৃদরোগ আক্রান্ত হবার গড় বয়স ৫৩ বছর, যেখানে পুরুষ রোগী ৮৮ শতাংশ। অপরদিকে স্বল্প বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হবার প্রবণতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণালব্ধ তথ্যাদি থেকে পাওয়া যায়, প্রায় ৪৬ শতাংশ হৃদরোগীর বয়স ৫০ বা এর নীচে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দৃঢ় করা জন্য সুস্বাস্থ্যের বিকল্প নেই । কারণ ব্যক্তি নিজে সুস্থ থাকলে দেশ ভাল থাকবে। যদি কোন ব্যক্তি একদিন অসুস্থ থাকেন, তিনি অফিস করতে পারবেন না। তার অসুস্থার কারণে অনেক কাজ বাকি থাকবে। ব্যক্তির কার্য সম্পাদন সম্পন্ন করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন ব্যহত হয়। সুতরাং সুস্থ থাকা সকলের প্রয়োজন। সুস্থ থাকার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্রেণিভেদ নেই। যে কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এ রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকদের নিজ ঘর থেকেই সচেতন হতে হবে। কারণ আমাদের কাছে অনেক চিকিৎসকের পরিবারের সদস্য হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে আসেন। তাদের অধিকাংশ হৃদরোগ সচেতন নয়। সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে হৃদরোগ সচেতন হতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোস্তাহিরুল হক। সভাপতিত্ব করেন হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুর রহমান।