দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করেই নির্বাচন দেবে। নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর কোনো উপদেষ্টার সম্পদ একটুও বাড়বে না। এ জন্য উপদেষ্টাদের জন্য সম্পদ বিবরণীর ফরম তৈরি করা হয়েছে। সবাই সেখানে হিসাব দেবেন এবং দায়িত্ব ছাড়ার পর আমাদের সম্পদ একটুও বাড়বে না বলে কথা দিচ্ছি।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ‘মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাম্য ও সম্প্রীতির আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হাসান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের (উপদেষ্টাদের) সম্পদের হিসাব দিচ্ছি। ক্যাবিনেটে আমাদের জন্য সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার ফরম তৈরি করা হয়েছে। আমরা হিসাব দিচ্ছি।
আমি আশাবাদী, আমরা যেদিন দায়িত্ব থেকে সরে যাব, আমার যে সম্পদ বিবরণী ছিল, তার থেকে এক টাকাও বাড়বে না। কারণ আমরা একটি আগ্রহের জায়গা থেকে কাজ করছি। এই দায়িত্বে আসার আগে আমার অনেক আয় ছিল। এখন সেগুলো নেই।
আমার জীবনের সোনালি অধ্যায় এই সময়, আমি রাষ্ট্রকে সেবা করছি। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন হিউম্যান ল, হিউম্যান রাইটসসহ কত আইন তৈরি হয়েছে বিশ্বে। কিন্ত ১৪০০ বছর আগে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করছেন সব মানুষ সমান। কোনো বৈষম্য করা যাবে না। তিনি আমাদের জন্য উত্তম চারিত্রিক নিদর্শন রেখে গেছেন।
হিউম্যান রাইটস নিশ্চিত করেছেন আমাদের প্রিয় নবী। অনেক দার্শনিক সুন্দর কথা বলে গেছেন। কিন্ত একমাত্র রাসুল (সা.) যা বলেছেন, তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আমরা যদি রাসুলের আদর্শ মেনে চলি, মুদ্রাপাচার লুটপাট হবে না। আমরা সবাই বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা অর্থনৈতিক ও নির্বাচন বিষয়ে সংস্কার করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে, কিছু সংস্কার সূচনা করে আমরা টেকসই অর্থনৈতিক সংস্কার, একটু সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দেব। সে নির্বাচনে প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। যারা নির্বাচিত হবেন তাদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেব। মানুষ এত বছর ভোট দিতে পারেনি।
খালিদ হাসান আরো বলেন, ‘বিশ্বনবী যুদ্ধের ময়দানে সতর্ক করে দিতেন, কোনো মহিলা শিশু যেন মারা না যায়। তিনি ঘোষণা দিতেন, খ্রিস্টান, মন্দির এবং কোনো স্থাপনায় যেন হামলা না হয়। নারীর কোনো মর্যাদা ছিল না, তিনি এসেই ঘোষণা দিয়েছেন, মায়ের পদতলে জান্নাত। তার আদর্শ আমরা লালন ও পালন করব। অনেক ব্যক্তি আছে, যাদের দাড়ি, টুপিসহ সুন্নতি পোশাক রয়েছে। অথচ তারা লুটপাট-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এটা আমাদের জন্য অ্যালার্মিং। মোহাম্মদ (সা.) বলে গেছেন, হারাম এক ফোঁটা রক্ত, কিংবা মাংস জান্নাতের প্রবেশ করবে না। ইসলামী লেবাস পরিধান করলে তা বাস্তবায়নকারী করতে হবে। লেবাস এক রকম আবার কর্মকাণ্ড ভিন্ন রকম, এই বৈপরীত্য আমাদের জন্য ক্ষতিকর।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।