দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতারা ১৭ লাখ টাকা বাকি খেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন দুজনে পৌনে ৬ লাখ টাকার মতো বাকি খেয়েছেন বলে ক্যান্টিন মালিক দাবি করেছেন। হলের ক্যান্টিন মালিক বাবুল হোসেন জানান, ২০১৯ সাল থেকে তিনি এ বাকির টাকা হিসাব করেছেন।
শুক্রবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে তিনি ৪৮ নেতার নাম ও বাকির পরিমাণ লিখে একটি তালিকা হল অফিসে জমা দিয়েছেন। তবে এর স্বপক্ষে তিনি কোনো জোরালো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে নেতারা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তার দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রলীগ নেতা ৩১৬ নম্বর রুমের উচ্ছল ৮৫ হাজার, ৪০৯ নম্বর রুমের রবি ১ লাখ ১৮ হাজার, ৩১৭ নম্বর রুমের সাজু ১২ হাজার, ৩০৬ নম্বর রুমের নাহিদ ১ লাখ ১৫ হাজার, ২২০ নম্বর রুমের জুয়েল ১ লাখ ১৫ হাজার এবং একই রুমের ছাত্রলীগ নেতা কাজল ৭০ হাজার ,২২২ নম্বর রুমের শুভ ১৭ হাজার, ২১৮ নং রুমের ইমরান ৩ হাজার, ৪০৫ নম্বর রুমের লালন ৪ হাজার পাঁচশ, ২১৬ নম্বর রুমের আলিফ ১২ হাজার, ২২১ নম্বর রুমের বাপ্পি ১৮ হাজার টাকা, ২১২ নম্বর রুমের হৃদয় ৩ হাজার, ২১০ নম্বর রুমের হারুন ৭০ হাজার, ২০৫ নম্বর রুমের হাবির ৩ হাজার, ৩১৯ নং রুমের নুহাশ ৩ হাজার, ৩২১ নম্বর রুমের রাহিম সরকার ৫৫ হাজার, ৩১৪ নম্বর রুমের আবদুল আলীম ৬০ হাজার, ৩২০ নম্বর রুমের জাওয়াদ ১০ হাজার, ৪০২ নম্বর রুমের তানজিদ আলামিন ৫ হাজার, ৩২২ নম্বর রুমের সিফাত ২ হাজার টাকা, ৩০৮ নম্বর রুমের এমরান ২৫০০, ২০৭ নম্বর রুমের লাভলু ৩ হাজার, ৩১৫ নম্বর রুমের আফসার ৪৫ হাজার টাকা এবং শাহাদাত ৩০০০, ৫১৫ নম্বর রুমের শাহাদাত ১৫ হাজার , ৫১৬ নম্বর রুমে জাহিদ ৩ হাজার, ৩১৪ নম্বর রুমে সাব্বির ৩ হাজার , ৩১১ নম্বর রুমের বায়জিদ ৪৫ হাজার, ৩২২ নম্বর রুমের বায়জিদ ২০০০, ৫১৪ নম্বর রুমের নাজমুল ৩৫ হাজার, ৩১৪ নম্বর রুমের আসিফ ৩ হাজার, ৪১৭ নম্বর রুমের সিরাজ ৪ হাজার এবং রাজু ৬১ হাজার, ৩১৪ নম্বর রুমের অটল ৪ হাজার, ৫২১ নম্বর রুমের লাভলু ৪৮ হাজার টাকা, ৫০১ নম্বর রুমের ২৫০০ টাকা, ৩১৮ নম্বর রুমের মেহেদী ৩৫০০ টাকা, ২২২ নম্বর রুমের বাঁধন ৮ হাজার,৩১৯ নম্বর রুমের শ্যামল ৩০০০, ৫১৬ নম্বর রুমের হাতিম ৫ হাজার, ২১৯ নম্বর রুমের কাব্য ২০০০ এবং সৌরভ ৫ হাজার, ৪১৯ নম্বর রুমের হাসান ৪০০০, ৩১৮ নম্বর রুমের মিজান ৩০০০ টাকা বাকি খেয়েছেন।
ক্যান্টিন মালিক বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতারা আমার ক্যান্টিন থেকে নিয়মিত বাকি খেয়েছেন। সভাপতি রিয়াজ আর সেক্রেটারি মুন দুজনই ৬ লাখের মতো বাকি খেয়েছেন। টাকা চাইলেও তারা দিতেন না। তিনি আরও বলেন, এখন তারা আমাকে পথে বসিয়ে পালিয়েছেন। আমি প্রভোস্ট অফিসে এই লিস্ট জমা দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।
তবে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার বলেন, এর আগে আমি ক্যান্টিন ঘুরে তার খাবারের মান নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি, তার কাছে কেউ বাকি খায় কি না জানতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি বরাবরই আমাকে বলেছেন তার কাছে কেউ বাকি খায় না। আমি তাকে নেতাদের নাম দিতে বলেছিলাম, তিনি দেননি।
তিনি বলেন, এত টাকা বাকি খেলে তিনি কীভাবে ক্যান্টিন পরিচালনা করেছেন আমি জানি না। তিনি আগের প্রভোস্টের কাছে কোনো অভিযোগ দিয়েছিলেন কি না সেটাও দেখতে হবে। এতো টাকা বাকি থাকার পরও তিনি কীভাবে ক্যান্টিন চালিয়েছেন সেটাও দেখার বিষয়। এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।