দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অমর চিত্রনায়ক সালমান শাহ। নব্বই দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ধূমকেতুর মতো তার আবির্ভাব। মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান তিনি। বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকা অবস্থায়ই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে তার মৃত্যু হয়। আজ এ নায়কের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন তরুণ প্রজন্মের স্টাইল আইকন।
মৃত্যুর এত বছর পেরিয়ে গেলেও সালমান শাহ খুন হয়েছেন নাকি আত্মাহত্যা করেছেন, এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা যায়নি! গত ২৬ বছর ধরে চলছে তার হত্যা মামলার তদন্ত। পিবিআইয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয় সালমান শাহ আত্মাহত্যা করেছেন। সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী এই তদন্ত প্রতিবেদন মানতে নারাজ। তিনি শুরু থেকেই বলে এসেছেন তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী পিআইবির তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং সালমানকে যে পরিকল্পিতভাবে হত্যার নানা যুক্তি ও ঘটনার বিশদ তুলে ধরেন।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় অবস্থিত নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড় ছিলেন। ছোটবেলায় তিনি ছিলেন কণ্ঠশিল্পী। ইমন নামে অভিনয়জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে।
মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে একাই রাজত্ব করে গেছেন সালমান শাহ। এই চার বছরে উপহার দিয়েছেন ব্যবসাসফল ২৭টি সিনেমা। সালমান শাহ অভিনীত সিনেমাগুলো হলো—‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯৩), ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্নেহ’, ‘প্রেম যুদ্ধ’ (১৯৯৪), ‘কন্যাদান’, ‘দেনমোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘মহামিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’ (১৯৯৫), ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ (১৯৯৬), ‘প্রেমপিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ (১৯৯৭)।
সালমান শাহর অভিনয় দক্ষতা যেমন অসাধারণ ছিল, তেমনি তার স্টাইল ও ফ্যাশন সচেতনতা যুগের চেয়েও অনেক এগিয়ে ছিল। এ প্রজন্মের তারকাদের কাছেও প্রিয় একটি নাম। সবাই তাকে আজও খুঁজে বেড়ান।