বিনোদন ডেস্ক : নানা নাটকীয়তার পর চিত্রনায়ক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সাধারণ সম্পাদক পদ ফিরে পেতে জায়েদের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২ মার্চ বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর ফলে সমিতি নির্বাচনে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকল।
জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম মিডিয়া’কে বলেন- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। হাইকোর্টের রায়ের ফলের এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকল। নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত রায়ে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খান দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
এদিকে নিপুণ আক্তারের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন- এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন প্রাথমিক ফলাফলে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ। আপিল বোর্ড সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর এক চিঠিতে জানায়- আপিল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে।
এ অবস্থায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও আপিল বোর্ডের ৫ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
রুলে ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।
জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা ও মুজিবুল হক ভুইয়া।
অন্যদিকে নিপুণের পক্ষে শুনানি করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ও হারুন উর রশিদ।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশে ২ ফেব্রুযারির চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুল শুনানির জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন হাইকোর্ট। এর ধাবাহিকতায় ২৩ ফেব্রুয়ারিতে রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। তৃতীয় দিনের রুল শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণা করলেন।
অন্যদিকে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নিপুণ আপিল করেন। চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত আদেশ দেন। চেম্বার বিচারপতির হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নিপুণের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। একই সঙ্গে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে ওই সময়ে দুই পক্ষকে (নিপুণ ও জায়েদ) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। চেম্বার বিচারপতির এ আদেশ চলমান থাকবে উল্লেখ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ নিপুণের আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। এরপর হাইকোর্ট রুল শুনানি হয়। ২ মার্চ বুধবার আদালত রায় দিলেন।