দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার ঘটনা তুলে ধরে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও ক্ষমতাসীন জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। ওই দুটি দেশের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানোর জন্য সরকারের নিকট দাবি করেছেন আবু হোসেন বাবলা।
আজ রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে জাতীয় পার্টির আবু হোসেন বলেন, ‘সুইডেনে কোরআন অবমাননার পর এবার ডেনমার্কেও ঘটল একই ঘটনা। গত শুক্রবার ডেনমার্কের রাজধানীর একটি মসজিদ ও তুরস্ক দূতাবাসের কাছে কোরআন পোড়ানো ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী রাসমুস পালুদান ও তার দলের হার্ড লাইনের অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট। শুক্রবার কোপেন হেগেনে মসজিদের সামনে যে কোরআন পোড়ানো হয়েছে, সেখানে ফেসবুক লাইভে বলা হয়েছে, যতদিন ন্যাটোতে সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে, ততদিন এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে।’
‘গত ২১ জানুয়ারি সুইডেনে তুরস্ক দূতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তার (রাসমুস পালুদান) সংশ্লিষ্টতা আছে’ উল্লেখ করে বাবলা বলেন, ‘তার সুইডিশ অনুসারীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পৃথিবীর যে দেশেই হোক না কেন, আমাদের পবিত্র কোরআনের অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘কোরআনের অবমাননায় প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কেবল মুসলমান নয়, বিশ্বের কোনো ধর্মপ্রাণ মানুষ ধর্মের অবমাননা মেনে নিতে পারে না। গোটা বিশ্বের মুসলমানরা কোরআনের এই অবমাননায় ক্ষুব্ধ।’
‘প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা ও জুমার নামাজ আদায়ের সুবিধার জন্য শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন’ জানিয়ে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব জেলা-উপজেলায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারে মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন। ইতিমধ্যে ১০০টির নির্মাণ তিনি শেষ করেছেন। দেশের শতকরা ৯৩ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাঙালি মুসলমানরা অত্যন্ত ধর্মভীরু। পররাষ্ট্র প্রকাশ্যে আগুন দেওয়ার মতো ক্ষমার অযোগ্য ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য আবেদন করছি। ডেনমার্ক ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার জন্য ১৪৭ বিধি অনুযায়ী সাধারণ আলোচনা ও নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের জন্য নোটিশ দিয়েছেন উল্লেখ করে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী সেই নোটিশ পড়ে শোনাতে শুরু করেন।
স্পিকার নোটিশের পরিবর্তে পয়েন্ট অব অর্ডারে বলার জন্য অনুরোধ করেন। তখন ওই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে প্রতিবাদ করা হয়েছে। সরকারের কাজ সরকার করেছে। মুসলমান হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সংসদেরও দায়িত্ব আছে। কোরআনের অবমাননার জন্য বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই মুহূর্তে মিটিং মিছিল শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবারও মিটিং মিছিল শুরু হবে। কোরআন নয়, যেকোনো ধর্মগ্রন্থের অবমাননায় আমরা নিন্দা জানাই। এ জন্য আমার দাবি থাকবে, আমার প্রস্তাবটি ১০ মিনিটের জন্য হলেও আলোচনা করে ঘটনার নিন্দা জানানোর।’