কক্সবাজার থেকে বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত লিখিত বক্তব্যে বলেন- কক্সবাজারের মালুমঘাটে একই পরিবারের ছয় ভাই নিহত হওয়ার ঘটনা দুর্ঘটনাজনিত নয়। ঘটনার পর রাতেই তাঁদের ভাই প্লাবন সুশীলের কথিত স্বাক্ষরে চকরিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। কিন্তু এত বড় ঘটনার পর প্লাবন তখন থেকে এখনো মানসিক বিকারগ্রস্ত অনেকটা উন্মাদ অবস্থায় রয়েছেন। তাই এজাহারে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলা হলেও তা আদৌ তখন প্লাবনের পক্ষে বলা সম্ভব ছিল না। প্লাবনকে দিয়ে যে এজাহার দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীত। এজাহারে স্বাক্ষর নেওয়ার সময় তাঁদের তা পড়তে দেওয়া হয়নি বলে নিহত ব্যক্তিদের কাকা সন্তোষ সুশীল ঐক্য পরিষদের নেতাদের জানিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলেন উল্লেখ করা হয়।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে এই মন্তব্য করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ৮ ফেব্রুয়ারি মালুমঘাটে পিকআপের চাপায় নিহত ছয় ভাইয়ের পিসতুতো ভাই আইনজীবী রঘু মনিও উপস্থিত ছিলেন।
রানা দাশগুপ্ত নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর প্রত্যক্ষদর্শী দুই বোন বলেছেন- পিকআপটি তাঁদের ভাইদের একবার চাপা দেওয়ার পর আবার পেছনের দিকে দেওয়া হয়। এটাও এজাহারে উল্লেখ নেই। কেন ও কোন উদ্দেশ্যে কাদের প্ররোচনায়, কাদের মামলা থেকে বাঁচাতে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করা হলো, তা মামলার তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ পিবিআইকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বের করার আহ্বান জানান।
৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার আগে ২৮ জানুয়ারি সুরেশ সুশীলের বাড়িতে হামলা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলেন। বক্তব্যে বলা হয়- বাড়ির আঙিনায় মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে ২৮ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় স্থানীয় কিছু লোকজন ঘরে ঢুকে সুরেশ সুশীল, ছেলে চম্পক ও প্লাবন সুশীলকে মারধর করেছেন। এই ঘটনার পর গত ৩০ জানুয়ারি সুরেশ মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়- ৮ ফেব্রুয়ারি গাড়ি চাপায় ছয় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁদের আত্মীয় উজ্জ্বল সুশীল একটি বেসরকারি টিভির এ সংক্রান্ত সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার দেন। সংবাদটি ছিল, ‘এটি দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বিষয়ের। এরপর মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অডিও ক্লিপ পাঠিয়ে উজ্জ্বলকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
রানা দাশগুপ্ত বলেন- এসব ঘটনার সঙ্গে গাড়িচাপায় হত্যার ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এটি দুর্ঘটনাজনিত নয়। অবস্থাদৃষ্টে প্রতিভাত হয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তদন্তকারী সংস্থাকে অনুরোধ করব- এই বিষয়গুলো যেন বস্তুনিষ্ঠভাবে তদন্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ নেতা পরিমল চৌধুরী, তাপস হোড়, শ্যামল পালিত, নিতাই প্রসাদ ঘোষ, প্রদীপ চৌধুরী, অসীম দাশ, দারুব্রহ্মচারী জগন্নাথ দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।