নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন- আমরা একটা সেতু করতে পারি এটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। তার উপর এই সেতুটা হচ্ছে দ্বিতল সেতু। এই সেতু করতে গিয়ে সেখানে আমাদের ওপর একটা মিথ্যা অভিযোগ, দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। যেটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। আমরা এখানে দুর্নীতি করতে বসিনি। নিজের ভাগ্য গড়তে বসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি।
শেখ হাসিনা বলেন- সেখানে আমাদের দেশেরই একজন, যে আমাদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছে, সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা আমার কাছ থেকে নিয়েছে। তারই বেইমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারের পক্ষ থেকে ড. ইউনূস’কে কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, তারও কিছু বিবরণ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন- গ্রামীণ ফোন, এই ব্যবসাটা আমার আমলে আমি তাকে দিয়েছিলাম এবং তাকে অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। ৯৮’র বন্যার সময়ও অর্থনৈতিক মন্দা, তার উপর দীর্ঘ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেই অবস্থায়ও ওই ব্যাংকটা যাতে চালু রাখতে পারে তার জন্য প্রথমে ১০০ কোটি, তারপরে ২০০ কোটি এবং তারপরে আরো ১০০ কোটি- এই ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যাংকটা চালু রাখার সুযোগ করে দিই।
শেখ হাসিনা বলেন- গ্রামীণ ফোনের ব্যবসাটা দিয়েছিলাম যে ফোনের লভ্যাংশটা গ্রামীণ ব্যাংকে যাবে। জীবনে এক পয়সা চাইনি। শ্রমিকদের পাওনা টাকাটাই দেয় না, তো আর কী দেবে? এটা হচ্ছে আমার দেশের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাবশালীদের সঙ্গে ইউনূসের সখ্যের প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন- তিনি তদবির করে এই ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দিয়ে হিলারি ক্লিনটন তার বন্ধু ছিল, সে ছিল আমেরিকার পরররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে তিনি (ইউনূস) মোটা অংকের চাঁদাও দিয়েছিলেন, অনুদান দিয়েছিলেন। জানি না এত টাকা সে কোথা থেকে পেল। কিন্তু সেটাও দিয়েছিল। কাজেই সেই আমেরিকান সরকারকে ধরে এই ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমার পদ্মার টাকা বন্ধ করে দেয়। এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় কানাডা কোর্টে।
সেই চ্যালেঞ্জ জয়ের তৃপ্তি প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন- আল্লাহর রহমতে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে। যে দক্ষিণ অঞ্চল সারা জীবন অবহেলিত ছিল আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ এই যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা জায়গায় যদি হয়, তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই উন্নতি হয়।
আজ ১৬ জুন বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুরের পল্লী জনপদ এবং কোটালীপাড়ার ‘বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বাপার্ড) উদ্বোধন করে পদ্মা সেতু নিয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।