জার্মান থেকে লিটন খান : পাসপোর্ট কর্মকর্তা যাদের সম্পর্কে অভিযোগ এবং যারা অভিযোগ করেছেন- সবার সাথে কথা বলে আজকের লেখা। প্রথমত অনেকের অভিযোগ টেলিফোনে সহজে পাওয়া যায় না। একজনের সাথে কথা বললে তখন অন্যজন পায় না। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে কর্মকর্তারা জানান। দূতাবাসে আগতদের জন্য রিসেপশনের পাশে পানীয় ও হালকা স্ন্যাক্সের মেশিন বসানোর আশ্বাস দেন, প্রয়োজনে রাষ্ট্রদূতের নিজের খরচে।
সম্প্রতি একজনের ভিসা আরেকজনের পাসপোর্টে লাগানোর ঘটনা ঘটে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- এটা মূলত নাকি ভিসা প্রসেজিংকারী সংস্থা ‘ভিসা ভেল্ড’ করেছে। পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় দূতাবাসের নজরে আসলে তারা ঠিক করে দেয় তাৎক্ষণিকভাবে।
একজন অভিযোগ করেছেন- নো ভিসার আবেদনের সার্ভার বন্ধ করে রাখে দূতাবাস ও টাকা নিয়ে করে দেয়। কথাটা পুরো সঠিক না। কারণ এই সার্ভার কন্ট্রোল করে ঢাকা থেকে, দূতাবাসের বন্ধ রাখার কোনো ক্ষমতা নাই। তবে যারা বিভিন্ন ফর্ম ফিলাপ করতে পারে না বা পারতো না, দূতাবাসের একজনের ছেলে কম্পিউটরে করে দিতো, বিনিময় তার পারিশ্রমিক নিতো। কর্মকর্তারা জানার পর এ ব্যাপারটি আর হয় না।
যাদের পাসপোর্ট নবায়ন করার সময় বিভিন্ন রকম ভুল হয়। মূলত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জন্মসনদে ভুল থাকার কারণে এমন হয়। আর ঢাকা অফিস যতদিনে পাসপোর্ট ইস্যু না করে, দূতাবাসের কোনো ক্ষমতা থাকে না দেওয়ার। তবে দূতাবাস কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কাগজপত্র জমা নেওয়ার সময় ভালো করে দেখে রাখলে হয়ত সমস্যা কম হবে।
অফিস আওয়ারে পার্সোনাল ফোনে অনেকে সময় কাটান বলে ফ্রাংকফোর্টের জনৈক অভিযোগ করেন এবং তাকে দুই মিনিটের কথা বলে এক ঘণ্টা পর আসেন। এই অভিযোগের জবাবে দূতাবাস জানায়- তার দুটা কাজের একটা কাজ সাথে সাথে করে দিয়েছে, অন্যটাও সময়মতো দিতে চেষ্টা করবে। একজন কর্মকর্তা বলেন- তাদের জনবল কম, তারপরও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব দিলে যথাসময় নির্ধারিত কাজ তারা করতে চেষ্টা করেন।
তবে একটা সচরাচর সমস্যা যার সমাধান সম্ভব বলে আমি মনে করি তা হলো কাগজপত্র বা পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য খাম বা ডাকটিকেট দেওয়া। এটা সত্যি বিরক্তিকর ব্যাপার। যখন নরমাল ফি ব্যাংকে আমরা দেই, ডেলিভারি বাবদ পাঁচ ইউরো দেওয়ার ব্যবস্থা করলে ভালো হয় বলে সবার বিশ্বাস।
অন্যদিকে কর্মকর্তা/কর্মচারীরা যখন ভ্রাম্যমাণ সেবা দিতে যান অন্য শহরে তখন ওই বিভাগে কাজের জন্য কাউকে দেয়া যেতে পারে। তাহলে কেউ এসে ফিরে যাবে না। তারপর দূতাবাসের কোনো প্রদেশের অনারারি কাউন্সিলর যদি সে তাকে পুরো জার্মানির কাউন্সিলর বলে বা লিখে এবং কমিউনিটির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে ও যা না, যেই পদবি ব্যবহার করে তা বেমানান এবং জেনেশুনে অপরাধ করা। জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডাটাবেইজের ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে আপনারা পড়ে দেখতে পারেন।
দূতাবাস কর্মকর্তারা বলেন- তাদের ওয়েবসাইটে সব সময় তাদের সবকিছুর আপডেট দেয়া থাকে। প্রবাসীদের অভিযোগগুলো রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেছি, তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। আর আমরাও যে কাজে যে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার, ঠিকমতো দেব, দাওয়াত না দিলে দাওয়াত পাওয়ার জন্য ধরনা ধরব না বেশরমের মতো। তাহলেই অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস। দূতাবাসকেও আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। সবার জন্য শুভকামনা।