দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : চীনের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে একটি শরণার্থীশিবিরে সামরিক হামলায় শিশুসহ অন্তত ২৯ জন নিহত এবং আরো ৫৬ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চীনের সীমান্তবর্তী কাচিনের লাইজা শহরের কাছের ওই শিবিরে এই হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে কাচিন রাজ্যের লাইজা শহরের কাছে এই শিবিরে আঘাত হানে সেনারা। ক্যাম্পটি কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির সদর দপ্তর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে।খিত থিট নিউজ এজেন্সি বলছে, হামলায় ১৩ শিশুসহ অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। কাচিন নিউজ গ্রুপ জানিয়েছে, হামলায় ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদিকে মিটকিনা নিউজ জার্নাল জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিন মাস বয়সী একটি শিশুও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, উদ্ধারকারীরা অন্ধকারে মৃতদেহ উদ্ধার করছে।
কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) কর্নেল নাও বু এএফপিকে জানিয়েছেন, সোমবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে সর্বশেষ হামলাটি ঘটে। তিনি বলেন, ‘আমরা শিশু এবং বয়স্ক মানুষসহ ২৯ জনের মৃতদেহ পেয়েছি… ৫৬ জন আহত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কোনো বিমানের শব্দ শুনিনি।’ তিনি উল্লেখ করেছেন, ক্যাম্প লক্ষ্য করে সামরিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা কাঠের ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে অন্তত ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করে মাটিতে সারিবদ্ধ করে রেখেছেন। কর্নেল নও বু বলেন, লাইজার কাছে একটি হাসপাতালে ৪২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে কাচিন রাজ্যে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষণ গ্রুপ অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) অনুসারে, অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে হাজার হাজার মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে এবং চার হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। কেআইএ কাচিনের বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সেখানে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম জেড খনি। কয়েক দশক ধরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে তাদের। গত বছরের অক্টোবরে কেআইএ আয়োজিত একটি কনসার্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় ৫০ জন নিহত এবং ৭০ জন আহত হয়। তবে দেশটির জান্তা সরকার জানায়, বিমান হামলায় বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার খবর গুজব।