দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেনডেজ পদত্যাগ করেছেন। বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে তিনি অস্থায়ীভাবে পদত্যাগ করেছেন। মার্কিন সিনেটর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে এই দম্পতি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই রাজনীতিক নিউ জার্সির সিনেটর। নিজ অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্য থেকেই তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে। তবে সিনেট কমিটির প্রধানের পদ ছাড়লেও সিনেটর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মেনেনডেজ (৬৯)। সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার শুক্রবার বলেছেন, মেনেনডেজ বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রভাবশালী কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক ডেমোক্র্যাট বলেছেন, ‘তার সহকর্মী একজন নিবেদিতপ্রাণ জনসেবক এবং সর্বদা নিউ জার্সির জনগণের জন্য কঠোর লড়াই করছেন।’ মেনেনডেজ ২০০৬ সাল থেকে কংগ্রেসে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে বৈদেশিক সম্পর্ক প্যানেলে লোভনীয় পদ ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফ্লোরিডার চোখের ডাক্তারের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নিউ জার্সিতে অভিযুক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সালেও একবার পদত্যাগ করেছিলেন তিনি।
বিচারকরা সর্বসম্মত রায়ে পৌঁছতে পারেননি। মেরিল্যান্ড ডেমোক্র্যাট বেন কার্ডিন। যিনি সেই সময়ে কমিটির নেতৃস্থানীয় ডেমোক্র্যাট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। শূন্যপদ পূরণের জন্য আবার অস্থায়ীভাবে তাকে বসানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রসিকিউটররা বলছেন, মেনেনডেজ ও তার স্ত্রী নাদিন নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোনার বার ও নগদ টাকা গ্রহণ করেছেন। তারা দুজন ‘মিসর সরকারকে উপকৃত করতে’ অর্থ গ্রহণ করেছিলেন বলে প্রসিকিউটররা দাবি করেছেন। তাদের দুজনের প্রত্যেকে তিনটি অপরাধমূলক অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন : ঘুষ নেওয়ার ষড়যন্ত্র, সৎ পরিষেবা জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং সরকারি অধিকারের রঙে চাঁদাবাজির ষড়যন্ত্র।
প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন, মেনেনডেজ ও তার স্ত্রী নিউ জার্সির তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ, সোনা, একটি বাড়ির বন্ধক, একটি বিলাসবহুল গাড়ি। ঘুষ প্রদান করা ব্যক্তিরা হলেন ওয়ায়েল হানা, হোসে উরিবে ও ফ্রেড ডাইবস। তারা আরো জানান, ২০২২ সালের গ্রীষ্মে ফেডারেল এজেন্টরা মেনেনডেজের বাড়িতে অনুসন্ধান চালিয়ে ঘুষের চুক্তির প্রমাণ পেয়েছেন। এ ছাড়া নগদ প্রায় চার লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে, যার অধিকাংশই ‘খামে ভর্তি এবং পোশাক, শৌচাগার ও একটি নিরাপদ স্থানে লুকানো ছিল।’
এজেন্টরা বলেছেন, তারা গ্যারেজে পার্ক করা হোসে উরিবের দেওয়া একটি বিলাসবহুল গাড়ি, সেই সঙ্গে বাড়িতে এক লাখ ডলার মূল্যের সোনার বার পেয়েছেন। মার্কিন অ্যাটর্নি ড্যামিয়ান উইলিয়ামস বলেছেন, ‘পর্দার আড়ালে সিনেটর মেনেনডেজ কিছু নির্দিষ্ট লোকের জন্য এই কাজগুলো করছিলেন, যারা তার স্ত্রীর মাধ্যমে তাকে ঘুষ দিচ্ছিলেন।’
মেনেনডেজ অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। তিনি একটি দীর্ঘ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বছর ধরে পর্দার পেছনের শক্তিগুলো বারবার আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার এবং আমার রাজনৈতিক কবর খননের চেষ্টা করেছে। আমি নিশ্চিত, একবার সব তথ্য উপস্থাপন করা হলে বিষয়টি সফলভাবে সমাধান হবে এবং আমার সহকর্মী নিউজার্সিবাসীরা এটি কী ছিল তা বুঝতে পারবেন।’