দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশা রাজ্যে একাধিক ট্রেনের সংঘর্ষে অন্তত ২৮০ এর বেশি ছাড়িয়ে গেসে। বিবিসর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এর সংখ্যা ২৮৮ জন এবং আহত হয়েছে ৯০০ জন। ওড়িশা ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারঙ্গিও বলেছেন, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮-তে। ওড়িশার মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা বলেছেন, ২০০টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে জানিয়েছিলেন, ১০০ জনেরও বেশি অতিরিক্ত ডাক্তার ঘটনাস্থলে রয়েছেন। ভারতে এই দুর্ঘটনাকে শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ এবং ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বলা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। বেঁচে যাওয়া একজন বলেছেন, ‘দুর্ঘটনাটি ঘটলে ১০ থেকে ১৫ জন আমার ওপর এসে পড়ে এবং সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।
আমি স্তূপের নীচে ছিলাম এবং আমার হাত এবং ঘাড়ের পিছনে আঘাত পাই। তিনি আরো বলেন, যখন আমি ট্রেনের বগি থেকে বের হয়েছিলাম দেখলাম কেউ তাদের হাত হারিয়েছে, কেউ তার পা হারিয়েছে আবার কারও মুখ বিকৃত হয়েছে।’ কিছু জীবিত যাত্রীকে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে ছুটে আসতে দেখা গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ঘটনাকে ‘গভীর বেদনাদায়ক’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি এই ঘটনায় ব্যথিত এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি টুইট করে বলেন, ‘ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। পরিস্থিতি নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও কথা বলেছি।
দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মোদি। এ ছাড়া আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়া হবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন। এদিকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভারতের রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওড়িশার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছিল। চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই এলাকা পেরিয়ে যাওয়ার সময় লাইনচ্যুত ট্রেনের বগির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। করমন্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি ঘটনাস্থলে একটি মালবাহী ট্রেনের বগির ওপরও আছড়ে পড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি।
ভারতে আরো একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮১ সালে। বিহার রাজ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের সময় যাত্রীবাহী ট্রেন ট্র্যাক থেকে সরে গিয়ে একটি নদীতে পড়ে যায়। এতে ৮০০ জন নিহত হয়েছিল।