দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : যুদ্ধের শুরতে ইউক্রেনের বন্দর শহর খেরসন দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। এখন পুরো খেরসন অঞ্চল পুনর্দখলে ইউক্রেন ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ইউক্রেন। লড়াইতে তারা রুশ সৈন্যদের চরম চাপের মধ্যে ফেলেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এই পরিস্থিতিতে বাঁচতে চাইলে রুশ সামরিক বাহিনীকে পালিয়ে যেতে হুমকি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তবে মস্কো বলছে, তারা ইউক্রেনের আক্রমণ প্রতিহত করেছে এবং কিয়েভের সৈন্যদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলছে, তাদের সৈন্যরা খেরসনে ‘পাল্টা হামলায়’ পশ্চিমাদের কাছে থেকে পাওয়া দূরপাল্লার অত্যাধুনিক রকেটের সাহায্যে ‘সাফল্যের সাথে’ রুশ সৈন্যদের অস্ত্র এবং অন্যান্য রসদের গুদাম ও সরবরাহ রুটের ব্যাপক ক্ষতি করতে সক্ষম হয়েছে।
টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইউক্রেনীয় সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন, নিপরো নদীর ওপর সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ক্রিমিয়া থেকে অতিরিক্ত অস্ত্র এবং সৈন্য জড়ো করতে রাশিয়ার সমস্যা হচ্ছে। রাশিয়ার সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও এতে দাবি করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি তারা বাঁচতে চায়, তবে রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর পালিয়ে যাওয়ার এটিই সময়। (রুশ সেনারা) বাড়ি ফিরে যাও।’
তিনি কিয়েভের যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন না জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন তার নিজস্ব (ভূমি) ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের এই দাবির জবাবে পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। মঙ্গলবার তিনি বলেন, রাশিয়া পদ্ধতিগতভাবে ইউক্রেনে নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সকল লক্ষ্যই পূরণ করা হবে।
ইউক্রেন গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বলে আসছে, তারা দক্ষিণের খেরসন অঞ্চল থেকে রাশিয়াকে হটাতে পাল্টা অভিযান শুরু করতে চলছে। এখন তারা বলছে, খেরসনে তাদের সেই প্রত্যাশিত পাল্টা অভিযান শুরু হয়েছে এবং এতে সাফল্যও পাওয়া যাচ্ছে। খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার নিযুক্ত নতুন প্রশাসনের প্রধান ভ্লাদিমির লিওনটিয়েভ বলেছেন, শহরের পরিস্থিতি বেশ উত্তেজনাকর এবং গত দুদিনে শহরে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে। রুশ সরকারি বার্তাসংস্থা তাস তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘একটি-দুটি নয় একের পর হামলা হয়েছে। খেরসন শহরে সম্ভবত ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে।’
তবে ইউক্রেনের এসব সামরিক সাফল্যের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। বার্তাসংস্থা তাস বলছে, রুশ বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ইউক্রেনের হামলা প্রতিহত করা হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে আরআইএ নভোস্তি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের এই নতুন লড়াইয়ে ১২০০ সৈন্য এবং প্রচুর অস্ত্র হারিয়েছে ইউক্রেন।