দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : এক যুগ আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গৃহযুদ্ধের ডাক দিয়েছিল দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিরিয়া। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে দেশটির সাধারণ জনগণ। গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ দ্বিতীয় সপ্তাহে আরো চড়াও হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক এই জনবিক্ষোভের শুরু হয়েছিল সিরিয়ার বর্তমান ভয়াবহ অর্থনৈতিক দূরাবস্থার প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
শুক্রবার দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের বিক্ষোভ মিছিলগুলোতে ধ্বনিত হয়েছে- ‘বাশার দূর হোক, সিরিয়া স্বাধীন হোক’, ‘সিরিয়া কোনও খামার নয়, আমরা ভেড়া নই’ প্রভৃতি স্লোগান। বর্তমানে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সিরিয়া। ১২ বছর আগে যখন গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন এক ডলারের বিপরীতে সিরিয়ান পাউন্ডের দর ছিল ৪৭। বর্তমানে সেই মূল্যমান নেমে পৌঁছেছে ১৫ হাজার ৫০০-তে।
সিরিয়ার ইতিহাসে এর আগে ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের এই পরিমাণ দরপতন ঘটেনি। চলতি বছর জুন মাসে জাতিসঙ্ঘ বলেছিল, সিরিয়ার ১২ বছরের সঙ্ঘাত দেশটির ৯০ শতাংশ জনগণকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে এনেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির দাম এবং থাকছে না বিদ্যুৎ। বিক্ষোভ নিরসনে সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক দুর্নীতি ও সরকারের অব্যবস্থাপনা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে গতি দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা একাধিকবার আসাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। পুরো দক্ষিণাঞ্চলে ধীরে ধীরে বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে। সিরিয়ার ১৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩টি ব্যাতীত বাকিগুলো এখনও রাজধানী দামেস্কে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রয়েছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বিরল, কিন্তু এবারের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মূলত সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোতেই।