দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : জাতীয় দলের মর্যাদা হারাল ভারতের তৃণমূল। বাম দল সিপিআই (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া) এবং মহারাষ্ট্রের নেতা শরদ পওয়ারের এনসিপির (ন্যাশানালিস্ট কংগ্রেস পার্টি) জাতীয় দলের তকমাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) পেয়েছে জাতীয় দলের মর্যাদা। সোমবার দেশটির নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল ও মণিপুর প্রদেশে রাজ্য পর্যায়ের দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তৃণমূলকে জাতীয় দলের মর্যাদা দিয়েছিল কমিশন। সে সময় লোকসভা ভোটে চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘রাজ্য দল’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সাত বছরের মাথাতেই সেই মর্যাদা হারাল দলটি। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘এখন এ বিষয়ে কিছু বলছি না। দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে বক্তব্য জানানো হবে।’
ভারতের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী জাতীয় দল হতে গেলে তিনটি শর্তের অন্তত একটি পূরণ করতে হয়। এক, লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। দুই, লোকসভায় তিনটি রাজ্য থেকে অন্তত ১১টি আসন (মোট আসনের ২ শতাংশ) জিততে হবে এবং আগের জেতা আসনের অন্তত চারটি পুনরায় জিততে হবে। তিন, অন্তত চারটি রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ তকমা পেতে হবে।
গুজরাটের ভোটে এই তৃতীয় শর্তটি পূরণ করতে পেরেছেন কেজরিওয়াল। কোনো রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ তকমা পেতে গেলে সেখানকার বিধানসভা নির্বাচনে ৬ শতাংশ ভোট এবং দুটি আসন পেলেই চলে। দিল্লি এবং পাঞ্জাবে ক্ষমতাসীন আপ গত ফেব্রুয়ারিতে গোয়ার বিধানসভা ভোটেও ৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল। এরপর ডিসেম্বরে নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের বিধানসভা ভোটেও সেই শর্ত পূরণ করে তারা।
জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোয় বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই হতে পারে তৃণমূলের। প্রথমত, কোনো জাতীয় দলের চিহ্নকে দেশের অন্য কোনো রাজ্যে অন্য কোনো দল ব্যবহার করতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয় বাদে মমতার জোড়াফুলের সেই ‘রক্ষাকবচ’ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, দলীয় দপ্তর তৈরি করার জন্য সরকারের কাছ থেকে জমি বা বাড়ি পায় জাতীয় দলগুলো, অন্য দল তা পায় না। তৃতীয়ত, নির্বাচনের সময় জাতীয় দল সর্বাধিক ৪০ জন ‘তারকা প্রচারক’ ব্যবহার করতে পারে, যেখানে অন্য দলের ক্ষেত্রে সেই সীমা ২০। উল্লেখ্য, ভারতের বর্তমান জাতীয় দলগুলো হলো, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্কসিস্ট (সিপিএম), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), ন্যাশনালিস্ট পিপলস পার্টি (এনপিপি) এবং আম আদমি পার্টি (আপ)।