দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ইসলামিক স্টেট (আইএস) ইরানে জোড়া বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের সাবেক প্রধান কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের ওই হামলায় বিষ্ফোরণে ৮৪ জন নিহত এবং বহুসংখ্যক মানুষ আহত হয়। তেহরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর এই ধরনের হামলা আর হয়নি। গত বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএস তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে বলেছে, বুধবার দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের কেরমান শহরের কবরস্থানে জড়ো হওয়া ভিড়ের মধ্যে দুই আইএস সদস্য বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এদিন ইরানের ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ডের অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার সোলেইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইরানের দক্ষিণ-পূর্বের নগরী কেরমানে তার কবরের পাশে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিল
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, বুধবারের হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট এর দাবি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সন্দেহ নেই। ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার কেরমানে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সোলেইমানির সৈন্যদের হাতেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
জোড়া বিস্ফোরণে নিহতদের দাফনের সময় ইরানি কর্তৃপক্ষ আজ শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। ইরানের শক্তিশালী রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস এই হামলাকে একটি কাপুরুষোচিত কাজ বলে বর্ণনা করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বুধবারের ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং একে ‘জঘন্য ও অমানবিক অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এই বোমা হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও একটি বিবৃতিতে এই হামলাকে কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা বলে নিন্দা এবং নিহতদের পরিবার ও ইরান সরকারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনা প্রাথমিকভাবে ১০৩ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল। পরে ইরানি স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাহরাম আইনোল্লাহি নিহতের সংখ্যা সংশোধন করে বলেন, ‘সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সঠিক সংখ্যা ৯৫ জন’। তিনি বলেন, আগের সংখ্যা ১০৩ হওয়ার কারণ ছিল কিছু নাম ‘ভুল করে দুবার নিবন্ধিত হয়েছিল’। তবে বৃহস্পতিবার ইরানের জরুরি পরিষেবার প্রধান হামলায় নিহতের সংখ্যা ৯৫ থেকে কমিয়ে ৮৪ জনে নামিয়ে আনেন।