1. bazmedialink7@gmail.com : Baz Alam : Baz Alam
  2. mdkaif01133@gmail.com : md :
  3. talhanrcc2014@gmail.com : Talha : MD TALHA
  4. deshbidesh2022@gmail.com : Tuhin Ahmed : Tuhin Ahmed
ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে শি চিনপিংকে সাহায্য করার আহ্বান ম্যাক্রোঁর - DeshBideshNews
November 28, 2024, 1:59 pm
 

ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে শি চিনপিংকে সাহায্য করার আহ্বান ম্যাক্রোঁর

  • Update Time : Friday, April 7, 2023
  • 83 Time View
ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে শি চিনপিংকে সাহায্য করার আহ্বান ম্যাক্রোঁর

দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ফরাসি নেতা এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন। বেইজিংয়ে তিনি শি-কে বলেন, ‘আমি জানি যে, রাশিয়ার হুঁশ ফেরাতে এবং সবাইকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে আমি আপনার উপর নির্ভর করতে পারি।’

শি বলেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষায় চীন ও ফ্রান্সের ‘সামর্থ্য ও দায়িত্ব’ রয়েছে। তবে মস্কো বলেছে যে, এখন পর্যন্ত ‘শান্তিপূর্ণ মীমাংসার কোন সম্ভাবনা নেই’ এবং তারা আক্রমণ অব্যাহত রাখবে। ম্যাক্রোঁ চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন এবং এটি পশ্চিমা ও চীনের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত খারাপ সম্পর্কের কারণে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চীন এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা করতে অস্বীকার করেছে।

ম্যাক্রোঁ বাণিজ্য সম্পর্কও জোরদার করতে চাইছেন। তার সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডের লেইন যোগ করে বলেন দিয়েছেন, যাকে তিনি চীনা নেতৃত্বের পাশাপাশি একটি বড় ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে, মি. ম্যাক্রোঁ কে শির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনায় প্রবেশের আগে বেইজিংয়ে একটি বড় সামরিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়েছে। বৈঠকটিকে চীন এবং ফরাসি কর্মকর্তারা ‘অকপট’ এবং ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় শি বলেন, ‘চীন শান্তি আলোচনার পক্ষে এবং একটি রাজনৈতিক সমাধান চায়’ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও ‘যৌক্তিক পদক্ষেপ’ গ্রহনের আহ্বান জানান।

তিনি আবারো বলেন, সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাশিয়া বলেছিল , তারা বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রাখার পরিকল্পনা করেছে। যেখানে এই জোটের সাথে নেটোভুক্ত দেশগুলোর সীমান্ত রয়েছে তার কাছাকাছি। ম্যাক্রোঁ বলেন, যতদিন ইউক্রেন অন্য কারো দখলে থাকবে ততদিন ‘আমরা একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল ইউরোপ পেতে পারি না’ এবং এটি ‘অগ্রহণযোগ্য’ যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একজন সদস্য সংস্থার সনদ লঙ্ঘন করেছে।

ফরাসি নেতা একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ স্বরে তার বক্তব্য রাখেন এবং সংবাদ সম্মেলনের সময় তিনি বার বার শি’র দিকে ফিরে তাকে সরাসরি সম্বোধন করছিলেন। এটি ছিলো শি’র নির্বিকারভাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার ঠিক বিপরীত। পরে একটি আলাদা সংবাদ সম্মেলনে, মিজ ফন ডের লেইন জোর দিয়ে বলেন, চীন যদি রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করে তবে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং এটি ইইউ এবং চীনের মধ্যে সম্পর্কের ‘মারাত্মক ক্ষতি’ করবে।

তিনি আরো বলেন, তিনি আশা করেন যে বেইজিং এমন একটি ভূমিকা পালন করবে যা ‘একটি ন্যায়সঙ্গত শান্তি প্রচার করে’ এবং তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির শান্তি পরিকল্পনার সমর্থনে ‘দৃঢ়ভাবে’ অবস্থান করছেন – যাতে রুশ সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।

চীন তার নিজস্ব শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে যা পশ্চিমা দেশগুলো স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে এটি রাশিয়ার পক্ষে খুব বেশি সমর্থনমূলক। তবে জেলেনস্কি এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি শির সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে এতে এখনো প্রকাশ্যে কোন প্রতিক্রিয়া আসেনি। কিন্তু মিজ ফন ডের লেইন বলেছেন শির সঙ্গে তার আলোচনার সময় তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলার ‘ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন’ যখন ‘পরিস্থিতি এবং সময় সঠিক হবে তখন।’ বৃহস্পতিবার, রাশিয়া স্বীকার করেছে যে চীনের ‘মধ্যস্থতার জন্য অত্যন্ত কার্যকর এবং ক্ষমতাশালী সম্ভাবনা’ রয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘কিন্তু ইউক্রেনের সাথে পরিস্থিতি জটিল, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মীমাংসার কোন সম্ভাবনা নেই এবং রাশিয়ার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।’ বৃহস্পতিবার রাতে ম্যাক্রোঁ একটি রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেন এবং শুক্রবার দুইজন দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংজুতে যাবেন যেখানে তারা আবার একসঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে খাবার খাবেন।

গত নভেম্বরে বালিতে জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাতের পর থেকে এই সফরটি পশ্চিমা কোন নেতার সঙ্গে শির সবচেয়ে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। ম্যাক্রোঁ যিনি নিজেকে একজন আন্তর্জাতিক শান্তির মধ্যস্থতাকারী হিসাবে প্রমাণ করতে আগ্রহী। তিনি এই সফরের মাধ্যমে ইউক্রেন সংঘাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ নিশ্চিত করলেন।

পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন যে, গর্ব করার মতো বড় কোন কূটনৈতিক অর্জন নিয়ে তার এই চীন সফর থেকে ফেরার সম্ভাবনা কম। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বিষয়ে শির দৃষ্টিভঙ্গির যে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটবে। বলতে গেলে এমন সম্ভাবনা খুবই কম।ম্যাক্রোঁ সম্ভবত ছোট অগ্রগতি, পারস্পরিক মিল রয়েছে এমন ইস্যু এবং বাণিজ্য ও আলোচনার মাধ্যমে জড়িত থাকার সুবিধার উপর জোর দেবেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ফ্রান্স যেহেতু পশ্চিমা জোটের অংশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ, তার মানে এই নয় যে এটি রাশিয়ার মিত্র চীনের সাথে তার সম্পর্ক গভীর করতে পারবে না।

সংবাদমাধ্যমে তার মন্তব্যে, ফরাসি নেতা চীনের মানবাধিকার বিষয়গুলো নিয়ে তেমন কিছু বলেননি যা চীন এবং পশ্চিমের মধ্যে একটি বহু বছরের বিরোধের অন্যতম কারণ। তবে তিনি বলেছিলেন যে, এই ইস্যুগুলো ফ্রান্সের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও ‘বক্তৃতা দেওয়ার চেয়ে সম্মান করা ভাল।’ ম্যাক্রোঁ সফরে ফরাসি এবং চীনা কর্পোরেশন এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বাক্ষরিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও হয়েছে, যা তিনি এবং শি প্রত্যক্ষ করেছেন।

তার সফর সঙ্গীদের মধ্যে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, শিল্পী ও জাদুঘরের কর্মকর্তারাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল রয়েছেন। এদর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস, বিলাসবহুল গ্রুপ এলভিএমএইচ এবং পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইডিএফ-এর শীর্ষ কর্মকর্তা। ফ্রান্সে পেনশন ব্যবস্থার অজনপ্রিয় সংস্কার নিয়ে ধর্মঘট ও অস্থিরতার মধ্যেই ম্যাক্রোঁ সর্বশেষ শির সঙ্গে দেখা করার চার বছর পর বেইজিং সফর করছেন।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ