দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : খরচ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় দেউলিয়া হয়ে গেছে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর বার্মিংহাম। শহরের নারী সরকারি কর্মীদের ‘সমবেতনের’ পাওনা দেওয়ার মতো অর্থ আর না থাকায় বাধ্য হয়ে গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে শহরটির স্থানীয় সরকার বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল।
ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই কাউন্সিল ধারা-১১৪ নোটিশ জারি করেছে। এরমাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় সব ব্যয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল আরও জানিয়েছে, তাদের এই অর্থবছরের বাজেটেই ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড ঘাটতি রয়েছে। এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে সিটি কাউন্সিল বলেছে, ‘সমবেতনের পাওনা শোধ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই এবং এই অর্থ পরিশোধের কোনো উপায়ও আমাদের কাছে নেই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ধারা-১১৪ নোটিশ জারির অর্থ হলো, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের রক্ষা ও সাংবিধানিক বিষয় ছাড়া সকল নতুন ব্যয় এ মুহূর্ত থেকে বন্ধ হয়ে যাবে। ২০১২ সালে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নারী কর্মীদের সমবেতন পরিশোধের পক্ষে রায় দেন। মূলত বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলে যেসব কর্মী কাজ করতেন তাদের মধ্যে পুরুষদের বোনাস দেওয়া হলেও নারীদের দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে নারীরা আদালতের দারস্থ হলে তাদের পক্ষে রায় দেওয়া হয়।
বার্মিংহাম কাউন্সিল গত জুনে বলেছিল, আদালত নির্দেশ দেওয়ার পর গত এক যুগে নারী কর্মীদের ১ দশমিক ১ বিলিয়ন পাউন্ড পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এখনো অনেক অর্থ বাকি রয়ে গেছে। ওই সময় কাউন্সিল জানিয়েছিল, তারা এই অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু এসব অর্থ পরিশোধে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। স্থানীয় সরকার বা সিটি কাউন্সিলগুলো মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থায়ন, পার্কিং সার্ভিস এবং ট্যাক্স থেকে অর্থ আয় করে থাকে।
তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দপ্তর জানিয়েছে, স্থানীয় যেসব কাউন্সিল আছেন তাদের নিজেদের বাজেট নিজেদেরই যোগাতে হবে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, এ অর্থবছরে কাউন্সিলদের বাড়তি ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলকে কোনো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে না। কারণ সিটি কাউন্সিলের কর্মকর্তারা কাউন্সিলের ফান্ড নিয়ে হেরফের করেছেন। সমবেতনের অর্থ পরিশোধ ছাড়াও সামাজিক ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং মূল্যস্ফীতির কারণে আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল।
এছাড়া বার্মিংহাম ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন ও নতুন একটি আইটি সিস্টেম প্রতিস্থাপন করেছিল। আর এ দুটি বিষয় তাদের ওপর বিশাল আর্থিক চাপ ফেলেছে। তবে একই সময়ে রিজেনারেশন প্রজেক্টে অর্থায়ন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে শহরটি বিশাল উন্নতি দেখেছে।