দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ জাপান। মাসওয়ারি হিসেবে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি দেখল দেশটি। জাপানের পণ্যদ্রব্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। গত জানুয়ারিতে গাড়ি এবং চিপমেকিং যন্ত্রপাতির জন্য চীনা চাহিদা কমে যাওয়ায় তীব্রভাবে মন্থর হয়েছে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি। ফলে বিশ্বব্যাপী মন্দার বিষয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত উপাত্তে বলা হয়, জানুয়ারির বাণিজ্য ঘাটতি গত আগস্টের ২ দশমিক ৮২ ট্রিলিয়ন ইয়েনের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অন্যান্য দেশের ওপর জ্বালানিনির্ভরতার কারণে জাপানের আমদানি ব্যয় আকাশচুম্বী। এ নিয়ে টানা ১৮ মাস বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বলে জানায় জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়। জানুয়ারিতে শুরু হওয়া চীনের চান্দ্রবর্ষের ছুটিতে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতিতে রপ্তানি কমেছে জাপানের। বিপরীতে আমদানি সচল থাকায় দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ১ দশমিক ৪২ ট্রিলিয়ন ইয়েনে দাঁড়িয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে জাপানের আমদানি ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক শূন্য ৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। মূলত কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), প্রাকৃতিক গ্যাস ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে জাপান। রপ্তানি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৫৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি ছিল জাপানের রপ্তানি বাণিজ্যের উজ্জ্বল জায়গা। গত মাসে জাপানের আমদানি ও রপ্তানি মাসওয়ারি ১৯৭৯ সালের পর সর্বোচ্চ। রপ্তানিনির্ভর জাপানের রপ্তানি হ্রাস বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যই হুমকির। সুদহার বৃদ্ধিসহ আগ্রাসী নীতিমালা নিয়ে এগোচ্ছে প্রধান অর্থনীতিগুলো।
দাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ চিসাতো অশিবা কিয়োদো এজেন্সিকে বলেন, ‘স্রেফ ছুটির মৌসুমের কারণেই কি চীনে রপ্তানি কমেছে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আমাদের পর্যাপ্ত ডাটা প্রয়োজন, কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো- যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হ্রাস।’ চীনে জাপানের রপ্তানি ১৭ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ৭৪৫ কোটি ইয়েন। অন্যদিকে আমদানি ১২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৩৯ ট্রিলিয়ন ইয়েন।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়লেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উদ্বৃত্ত ছিল জাপানের। অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপাত্তে দেখা গেছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে জাপানের রপ্তানি ১০ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে আমদানি ২১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৩৬ কোটি ইয়েনে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৭ হাজার ৩৭৯ কোটি ইয়েন।