দেশ-বিদেশ নিউজে ডেস্ক : গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ব্যাখ্যা দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। সামগ্রিকভাবে জ্বালানি খাতের ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া এবং আগামীতে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে গ্যাসের এই মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক বিশেষ জ্বালানি পরিস্থিতিতে ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী সকল প্রকার জ্বালানির মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ ছাড়া জ্বালানি সংশ্লিষ্ট বীমা খরচ, ঝুঁকি ব্যয়, ব্যাংক সুদ, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকা দুর্বল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে জ্বালানি খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানিমূল্যও অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়ে গেছে। এতে জ্বালানি খাতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি প্রদান করতে হচ্ছিল। সে কারণে জুলাই ২০২২ থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান উৎপাদন/সরবরাহ সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্পসহ সব খাতে গ্যাস রেশনিং করা হচ্ছে।
চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটানো, শিল্প খাতে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং রপ্তানিমুখী বিভিন্ন কলকারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে করণীয় সম্পর্কে সব অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়। যেহেতু স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানিপূর্বক উক্ত বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে হবে, সে কারণে সরকার বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর আগে আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৫ টাকা ০২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা করা হয়েছে। ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ টাকা। আর সার কারখানার জন্য বাড়ানো হয়নি, সেটি আগের মতো অর্থাৎ ১৬ টাকাই রয়েছে। শিল্প-কারখানার ক্ষেত্রে বৃহৎ শিল্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। মাঝারি শিল্পে ১১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা এবং ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক গ্রাহকদের (হোটেল, রেস্তোরাঁ) ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের দাম ২৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ টাকা। তবে সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের দাম আগের মতোই প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা থাকছে। এদিকে আবাসিকে এবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি, সেটি আগের মতোই রয়েছে। রান্নার গ্যাসের জন্য দুই চুলার (ডাবল বার্নার) মাসিক বিল ১০৮০ টাকা, এক চুলার মাসিক বিল ৯৯০ টাকাই রয়েছে। আর প্রিপেইড মিটারে প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা। এর আগে গত বছরের জুনে গ্যাসের দাম ২২.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।