দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। রোববার (৮ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিলটি পাসের সুপারিশ করে প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে গত ২৯ আগস্ট বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বর্তমানে শুধু সরকারি কর্মচারীরা অবসরের পর পেনশন সুবিধা পান। সরকারি চাকরিজীবীদের বাইরে দেশের সব নাগরিককে পেনশন-ব্যবস্থার আওতায় আনতে এই আইনি কাঠামো তৈরি করছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিলের খসড়ায় শব্দগত কিছু বিষয় সংশোধন ছাড়া পুরো কাঠামো অভিন্ন রেখে বিলটি আইনে পরিণত করতে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিলটি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সূত্র জানায়, খসড়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিলের শিরোনাম ছিল, ‘জনগণের বেকারত্ব, পঙ্গুত্ব বা বার্ধক্য কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত অভাবগ্রস্ততা ও দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্তিকল্পে আনীত বিল।’
সূত্র জানায়, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনাকালে শিরোনামটিকে একটি গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এর পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনাকে একটি ব্যাপক রূপ দেওয়ার জন্য বিলের শিরোনাম সংক্ষিপ্ত করে ব্যাপক অর্থে ব্যবহারের জন্য নতুন শিরোনাম অর্থাৎ ‘দেশের সর্বস্তরের জনগণকে একটি টেকসই পেনশন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে আনীত বিল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের অধীনে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে।
বিলে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও এর আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে মাসিক পেনশন, সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদা দাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন। এই চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আইন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। খসড়া আইনে বলা হয়েছে, চাঁদা দাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন-সুবিধা পাবেন।