দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : হংকংয়ের গবেষকরা নতুন একটি সমীক্ষায় দেখেছেন, চীনের সরকার দ্রুত মহামারি নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করার কারণে দেশটিতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে মারা যেতে পারে। করোনার প্রভাব কমানোর জন্য গণহারে বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রচারের অভাব এবং অন্যান্য ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে চীনে পুনরায় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় প্রতি মিলিয়নে প্রায় ৬৮৪ জন মারা যেতে পারে। সম্প্রতি করা এক গবেষণায় এ ধরনের বিষয় উঠে এসেছে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সাবেক ডিন গ্যাব্রিয়েল লিউং ওই গবেষণার সহ-গবেষক ছিলেন
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন ইনস্টিটিউটের (আইএইচএমই) এক পূর্বানুমানে বলা হয়েছে, চীনে তড়িঘড়ি কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কারণে ২০২৩ সালে রোগীর ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটতে পারে এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে। তাদের পর্যালোচনা বলছে, আগামী বছরের এপ্রিলের ১ তারিখ নাগাদ চীনে কোভিড রোগীর সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছাবে, মৃত্যুও সে সময় ৩ লাখ ২২ হাজারে পৌঁছাতে পারে। আইএইচএমই-র পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে জানান, ততদিনে চীনের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সংক্রমিত হতে পারে।
কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে করোনাভাইরাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি। সর্বশেষ গত ৩ ডিসেম্বর চীন কোভিডে মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল। দেশটি এখন পর্যন্ত মহামারিতে ৫ হাজার ২৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেছে। তীব্র বিক্ষোভ ও জনরোষের মুখে ডিসেম্বরেই চীন বিশ্বের অন্যতম কঠোর কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, যে কারণে সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতিও দেখা যাচ্ছে। আগামী মাসে চন্দ্র নববর্ষের মধ্যেই ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে ব্যাপকভাবে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
‘কেউ ভাবেনি তারা এতদিন শূন্য কোভিডে (নীতিতে) কঠোর থাকবে’, শুক্রবার আইএইচএমই-র পূর্বানুমান অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার দিন এমনটাই বলেছেন মুরে। তিনি আরো বলেন, চীনের শূন্য কোভিড নীতি হয়তো ভাইরাসের আগের ধরনগুলোকে সীমানার বাইরে রাখতে কার্যকর ছিল, কিন্তু অতি সংক্রমণশীল ওমিক্রনের কারণে ওই নীতি বজায় রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএইচএমই চীন সরকারের কাছ থেকে টিকাদান হার সংক্রান্ত তথ্য নিয়েছে এবং সংক্রমণের হার বাড়লে বিভিন্ন প্রদেশে কেমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে সে সম্বন্ধে ধারণা নিয়েছে বলে জানিয়েছে।
অন্যান্য গবেষকদের অনুমান, তড়িঘড়ি করে করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় চীনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারিতেই সংক্রমিতের সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছাতে পারে; বেশি আক্রান্ত হতে পারে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর লোকজন।