দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : একজনকে হত্যার দায়ে ৪৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আলজেরিয়ার একটি আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের গত বছর এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ঘটনার শিকার ৩৮ বছর বয়সী ওই চিত্রশিল্পীর নাম জামেল বেন ইসমাইল। ২০২১ সালের আগস্টে একটি পুলিশ ভ্যানে ছিলেন তিনি।
পুলিশি সুরক্ষায় থাকা অবস্থায় জনতা তাকে বাইরে টেনে নিয়ে মারধর শুরু করে। শেষে তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের সম্মুখীন হয় আলজেরিয়া। ওই বছর একাধিক দাবানলে দেশটিতে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে দাবানল শুরুর কারণ হিসেবে জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের ভুল সন্দেহের শিকার হয়ে প্রাণ হারান জামেল বেন ইসমাইল। বেন ইসমাইল একটি থানায় উপস্থিত হয়েছিলেন যখন জানতে পারেন দাবানল শুরুর কারণ হিসেবে তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। কিন্তু আগুন ছড়িয়ে দিতে নয় বরং দাবানল মোকাবিলায় অন্যদের সহায়তা করতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত বছরের আগস্টে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর একটি টুইট করেন ৩৮ বছর বয়সী জামেল বেন ইসমাইল। তিনি জানান, কাবিলি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল মোকাবিলায় সহায়তা করতে তিনি তার বাড়ি থেকে ৩২০ কিলোমিটার প্রায় ২০০ মাইল দূরে যাবেন। এই অঞ্চলটিই দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
তবে কাবিলি অঞ্চল থেকে নিজের এলাকায় ফিরে আসার পরপরই স্থানীয়রা জামেলকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সেসময় স্থানীয়রা দাবি করেন, জামেল নিজেই জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছেন। এই ঘটনা ও ভিডিওগুলো আলজেরিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের কারণ হয়েছিল। কিন্তু নিহত বেন ইসমাইলের ভাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের হামলার ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ তাদের মা এখনও জানেন না কিভাবে তার ছেলে মারা গেছে।
তার বাবা নুরদ্দীন বেন ইসমাইল বলেছেন, তিনি ‘বিধ্বস্ত’। তার ভাষায়, আমার ছেলে দাবানল মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য কাবিলি গিয়েছিল। এই অঞ্চলটি তার পছন্দের ছিল। কিন্তু তারা তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, বেন ইসমাইলকে হত্যা সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধের জন্য আদালত আরও ২৮ জনকে দুই থেকে ১০ বছরের মধ্যে কারাদণ্ড দিয়েছেন।