দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে সংযোগকারী কের্চ সেতুতে একটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকে আগুন লাগার পর যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে। এর পরপরই ইউক্রেনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অবৈধ সবকিছু ধ্বংস করা হবে, সেতু দিয়ে কেবল শুরু হলো। রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবাদ কমিটি জানিয়েছে, প্রথমে একটি লরি বিস্ফোরণে উড়ে যায়। এরপর সড়ক সেতুর সমান্তরালে থাকা রেল সেতুতে একটি মালবাহী ট্রেনের সাতটি বগিতে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় তিন জন নিহত হয়েছে।
ক্রিমিয়ার কের্চ প্রণালির ওপর নির্মিত সেতুটির বিপর্যয়ের পর ইউক্রেন শিবিরে বেশ উৎফুল্ল ভাব দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে গত এপ্রিলে রাশিয়ার মস্কভা রণতরি ধ্বংসের সঙ্গে তুলনা করেছে।
কিয়েভের অগ্রগতির দাবি হিসেবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সামগ্রিকভাবে ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অধিভুক্তির পর থেকে ধারাবাহিক ব্যর্থতার মুখে রয়েছে মস্কো। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে শুরু করে ক্রিমিয়াসংলগ্ন খেরসন অঞ্চলেও অগ্রগতির দাবি করে আসছিল কিয়েভ। এসবের পর ক্রিমিয়া সংযোগকারী সেতুর বিপর্যয় রাশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াল। কারণ এটি খেরসন ও জাপোরিঝিয়ায় যুদ্ধের রসদ সরবরাহে বড় ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে এটি ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের একমাত্র পথ।
সেতুর একাংশ ধ্বংসের পর রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি জানায়, শনিবার ভোরে সেতুর ওপরে মালবাহী একটি ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটে। এর ফলে ক্রিমিয়ামুখী ট্রেনের সাতটি বগিতে আগুন ধরে যায়। বর্তমানে কের্চ সেতুতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং কের্চ প্রণালিতে ফেরি চালু করা হয়েছে। সর্বশেষ মস্কো জানিয়েছে, শিগগিরই সেতুটি চালু করা হবে। ২০১৪ সালে গণভোট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্রিমিয়া দখলের পর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়ার যোগাযোগের জন্য আজভ সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের মাঝের কের্চ প্রণালির ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। নির্মাণকাজ শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৮ সালে এই সেতুর উদ্বোধন করেন, যা ক্রিমিয়া সেতু নামেও বেশ পরিচিত।
শনিবার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঘটনা জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ‘সরকারি কমিশন’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি জানায়, ট্রাকের মালিক রাশিয়ার ক্রাসোন্দর ক্রাই অঞ্চলের বাসিন্দা। এরই মধ্যে ওই এলাকায় তদন্ত শুরু হয়েছে। ট্রাকের যাত্রাপথ ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।