দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমে আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসছে। দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন ডলারের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ক্রমবর্ধমান সুদের হার বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে মন্দার দিকে নিয়ে যাবে, এই আশঙ্কায় তেলের চাহিদা কমে গেছে৷ এসব কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামও পড়ে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অন্যদিকে, জ্বালানি তেলের অপর বেঞ্চমার্ক ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৭৪ সেন্ট কমে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়েছে ৭৭ দশমিক ২১ ডলারে। ডব্লিউটিআইয়ের এই বিক্রয়মূল্য চলতি বছর ৬ জানুয়ারির পর সবচেয়ে কম। গত শুক্রবার থেকেই অবশ্য বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেদিন উভয় বেঞ্চমার্কের দাম প্রতি ব্যারেলে কমে গিয়েছিল প্রায় ৫ শতাংশ।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বাণিজ্য প্রায় সম্পূর্ণ ডলার নির্ভর। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশসমূহের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার জেরে গত মার্চে ডলারের পরিবর্তে নিজেদের মুদ্রা রুবলে জ্বালানি তেলের বাণিজ্য করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বলানি তেল রপ্তানিকারী দেশ রাশিয়া। তার আগ পর্যন্ত তেলের বাণিজ্য সম্পূর্ণ ডলার নির্ভর ছিল।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই অন্যান্য বৈশ্বিক মুদ্রার তুলনায় ডলারের মান বাড়ছে। বর্তমোনে ডলারের মূল্য যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারতীয় বংশোদ্ভুত আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজার বিশ্লেষক সুগন্ধা সাচদেভ রয়টার্সকে বলেন, ডলারের টানা মানবৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক ভারসাম্য ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও ডলারে লেনদেন করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে নিজেদের ডলারের মজুত ধরে রাখতে উন্নয়নশীল অনেক দেশ ডলারে তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে। তাদের মধ্যেই অনেকে আবার রাশিয়ার কাছ থেকে রুবলে তেল কিনছে।
এদিকে, জ্বালানি তেল উত্তলোন ও রপ্তানিকারী দেশসমূহের জোট অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ প্লাস (ওপেক প্লাস) অপরিশোধিত তেলের বাজারের মন্দাভাব কাটাতে জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।