আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ন্যান্সি পেলোসি চীনের কড়া হুঁশিয়ারির পরও তাইওয়ানে গেছেন । মঙ্গলবার রাতে তিনি নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগেই তাইপেতে এসে পৌঁছান। স্থানীয় সময় ১০টা ৪৪ মিনিটে তাঁর উড়োজাহাজ তাইপের মাটি স্পর্শ করে। মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে করে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে তিনি তাইপেতে এসে পৌঁছান। (খবর বিবিসি’র)
পেলোসির সফর ঘিরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলের জলসীমায় একটি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরিসহ চারটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে চীন। আকাশে চক্কর দিয়েছে চীনা যুদ্ধবিমান।
রাশিয়া ও চীন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছে- পেলোসির সফর উসকানিমূলক এবং তা এ অঞ্চলের জন্য অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করবে। তাইওয়ানে পৌঁছানোর পর পেলোসি বলেন- তাঁর প্রতিনিধিদলের সফর ‘তাইওয়ানের গতিশীল গণতন্ত্রের’ প্রতি আমেরিকার অবিচল প্রতিশ্রুতিকে সম্মানিত করেছে।
পেলোসি লিখেছেন- তাইওয়ানের ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের সঙ্গে আমেরিকার সংহতি আজ আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সফর কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী নীতির বিরোধিতা করে না।
পেলোসি তাইপের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে রাত কাটাবেন। তাঁর সফরের বিরোধিতা করে হোটেলের বাইরে চীনপন্থী লোকজন বিক্ষোভ করছেন।
তাইওয়ানের গণমাধ্যম বলছে- আগামীকাল সকালে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইংওয়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ন্যান্সি পেলোসি। এরপর তিনি তাইওয়ানের পার্লামেন্টে যাবেন এবং তিনি মানবাধিকার জাদুঘরেও যাবেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের তীব্র নিন্দা করেছে এবং একে এক চীন নীতির গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তারা বলেছে- এই সফর চীন-মার্কিন সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে।
দীর্ঘদিনের ‘শত্রু’ পেলোসির এই সফর নিয়ে অনেক গা-জ্বলা রয়েছে চীনের। কারণ, তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে বেইজিং। কিন্তু তাইওয়ানের মানুষ নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবেই দেখেন। যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছেন- পেলোসির সফরের দায় যুক্তরাষ্ট্রকে বহন করতে হবে এবং চীনের সার্বভৌম নিরাপত্তা স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করার জন্য মূল্য দিতে হবে। সামরিক উপায়ে এর জবাব দেওয়ারও হুমকি দেয় বেইজিং।
তাইওয়ানের বিপরীতে চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শিয়ামেনের বাসিন্দারা সাঁজোয়া যান চলাচল করতে দেখেছেন। গত সপ্তাহ থেকে চীনের সেনাবাহিনী দক্ষিণ চীন সাগর, পীতসাগর ও বোহান সিতে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছে।
এদিকে মার্কিন রণতরি ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান বর্তমানে ফিলিপাইন সাগরে অবস্থান করছে। মার্কিন নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন- যেকোনো উসকানিতে তাঁরা জবাব দিতে সক্ষম।
আঞ্চলিক সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন- চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কেউই সংঘর্ষ না চাইলেও উত্তেজনার সময়ে সেনা মোতায়েন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।
কিরবি গোয়েন্দা তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, চীন সম্ভাব্য সামরিক উসকানির প্রস্তুতি নিচ্ছে। পেলোসি সামরিক উড়োজাহাজে ভ্রমণ করছেন।