দেশ বিদেশ ডেস্ক : দেশজুড়ে সম্প্রতি আলোচিত হয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনে অনশনরত শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তার সঙ্গে বিক্ষোভ করছেন অনেক শিক্ষার্থীও। রেলওয়ের অনিয়ম বন্ধে রনির ওই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে কমলাপুর রেলস্টেশনে যান তিনি। এসময় সেখানে রনিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
রনির ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের পর আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেল থেকে আবারও অবস্থান নেন তিনি। শুরুতেই রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আনসার সদস্যদের বাধার মুখে পড়েন রনি। এরপর তার সঙ্গে শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হন। বাধা পেরিয়ে আবারও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মূল ফটকে বসে পড়েন ঢাবি শিক্ষার্থী রনিসহ শতাধিক আন্দোলনকারী। বিকেল পৌনে ৬টার দিকে তাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসময় আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন ‘দুর্নীতির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দুর্নীতির ঠাঁই নেই’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’ ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তুমি কে আমাকে বাঙালি-বাঙালি’।
কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষন করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, রেলে যে দুর্নীতি হয় এটা একটা বাচ্চাও জানে। দুর্নীতি যখন ক্যানসারে রূপান্তরিত হয়েছে, তখন রনির মতো ছেলেরা এর প্রতিবাদ করছে। এই রনিরা বাধ্য হয়ে এখানে এসেছে। তারা এসেছে বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজদের নগ্ন করে দেশ থেকে বিদায় করার জন্য। মানুষ যখন নির্যাতিত হয়, আস্তে আস্তে সে প্রতিবাদপ্রবণ হয়ে ওঠে। আমরা বারবার বলেছি, এয়ারপোর্ট ও রেলওয়ে মানুষকে নির্যাতনের জায়গা। এই নির্যাতন থেকে আমাদের মুক্তি দিতে হবে।
সুমন আরও বলেন, রেলমন্ত্রীর যিনি ওয়াইফ, তিনি এখন রেলওয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। ট্রেন ভ্রমণ করা মন্ত্রীর শ্বশুরবাড়ির লোকের টিকিট আছে কি না তা চেক করার কারণে টিটির চাকরি চলে গিয়েছিল। এরপরও রেলমন্ত্রী কীভাবে মন্ত্রী থাকেন এটাই আমার প্রশ্ন।
এর আগে গত ৭ জুলাই রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর স্টেশনে অবস্থান নেন মহিউদ্দিন রনি। ১৩ দিন ধরে তিনি একা সেখানে অবস্থান করেন। পরে ওই আন্দোলনে আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও তাতে অংশ নেন। সেখানে দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান তারা। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার রেলওয়ে অনলাইন টিকিট পার্টনার সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। তবে এখনো থামেনি রনির আন্দোলন। রেলওয়ের সমস্যা সমাধানে ৬ দফা দাবি নিয়ে চলছে তাদের বিক্ষোভ।