আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আজ বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ছাড়া দেশটিতে আরও দুটি স্থানে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে । রাশিয়ার হামলার আশঙ্কার মধ্যেই রাজধানীতে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেল।
এদিকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেওয়া ভাষণে ইউরোপে যেকোনো দিন রাশিয়া বড় ধরনের একটি যুদ্ধ শুরু করতে পারে বলে সতর্ক করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার নাগরিকদের এ যুদ্ধের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন- পুতিনকে ফোন করেও কথা বলতে পারেননি তিনি।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন- ‘রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলতে তাঁকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু এর উত্তরে নীরবতা ছাড়া কিছুই পাইনি।’ বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি আরও বলেন- ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া প্রায় দুই লাখ সেনা ও হাজার হাজার সামরিক যানবাহন মোতায়েন করে ফেলেছে।
রুশ ভাষায় দেওয়া ভাষণে রাশিয়ানদের হামলার বিরোধিতা করার আবেগপূর্ণ আকুতি জানিয়ে জেলেনস্কি বলেছেন- ইউক্রেন নিয়ে তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।
রাশিয়ানদের যুদ্ধের বিরোধিতা করার এমন আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন- কারা এ যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে? মানুষ। আমি নিশ্চিত, এই মানুষ হলেন আপনারা।
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলায় তাঁর দেশ প্রস্তুত জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন- তারা (রাশিয়া) যদি হামলা করে, তারা যদি আমাদের এই দেশ, আমাদের স্বাধীনতা, সাধারণ মানুষ ও শিশুদের জীবন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করব।
আত্মরক্ষায় রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করার অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন- আপনারা হামলা করলে পিঠ নয়, বরং আমাদের মুখই দেখতে পাবেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরই সীমান্তে সেনা পাঠানোর কথা জানায় রাশিয়া। এর মধ্যে জেলেনস্কি এ ভাষণ দিলেন।
যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত গুলির খোসা দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন ইউক্রেনের শিল্পী দারিয়া মার্কেনকো। প্রতিবাদী এই শিল্পকর্মের নাম দিয়েছেন, ‘যুদ্ধের মুখ’
রাশিয়ার সামরিক হামলার হুমকির মধ্যে ইউক্রেনে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাশিয়ায় বসবাসরত ইউক্রেনের লাখ লাখ বাসিন্দাকে দেশে ফেরত আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক মাসের এ জরুরি অবস্থা চলাকালীন ইউক্রেনের সরকার কারফিউ জারি করাসহ নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ জোরদার করতে পারবে।
প্রতিনিয়ত ইউক্রেন পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কোনো রক্তপাত ছাড়াই ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।