দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটের খেলা চলছিল তখন। বদলি শাহরিয়ার ইমন তখন ছুটছেন লেফট উইং ধরে। মালদ্বীপের একজনকে কাটিয়ে ঢুকে গেলেন ডি-বক্সে। বলের জন্য এক প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে সাথে নিয়ে ছুটে আসছিলেন অভিষিক্ত পিয়াস আহমেদ নোভা। তার ডামি, ফাঁকায় বল পেয়ে গেলেন পাপন সিং। দারুণ ফিনিশিংয়ে করলেন গোল, সুপার সাব হয়ে জেতালেন ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে হারলেও কিংস অ্যারেনায় দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতল ২-১ ব্যবধানে।
এক বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরা মালদ্বীপের বিপক্ষে হেরে চলতি ফিফা উইন্ডো শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ভুগেছিল ফিনিশিংয়ের সমস্যায়। একের পর এক আক্রমণে উঠেও গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না ফাহিম ফয়সাল,-শেখ মোরসালিনরা। মালদ্বীপের চেয়ে সবকিছুতেই এগিয়ে থেকেও কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। আজ সোহেল রানার জায়গায় মাঠে নামা পাপন করলেন জয়সূচক গোল। এর আগে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মজিবর রহমান জনি।
এই ম্যাচেও ফিনিশিংয়ের অভাবে ভুগেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের তখন ৮৪ মিনিট। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের দারুন এক পাস থেকে আচমকা এক শট নেন বদলি খেলোয়ার শাহরিয়ার ইমন। ধন্দে পড়ে যান মালদ্বীপ গোলরক্ষক হুসাইন শরীফ। রিবাউন্ডে বল ফাঁকায় পেয়ে যান অভিষিক্ত পিয়াস আহমেদ নোভা। তার কেবল ফাঁকি দিতে হত গোলরক্ষককে।
কিন্তু সেই সহজ সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেননি এই স্ট্রাইকার, বলটা গোলপোস্টের বাইরে মেরে। অভিষেকেই গোল করছেন, দলকে জেতাচ্ছেন; কী দারুণ এক গল্পটাই না লিখতে পারতেন তিনি। ব্যক্তিগত আফসোস হয়তো তার আছে, তবে দলগত এই সাফল্য তরুণ স্ট্রাইকার মনে রাখবেন দীর্ঘদিন।
এর আগেও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ৮৭ মিনিটে রহমত মিয়ার নেয়া ফ্রি-কিক তপুর মাথা ছুঁয়ে বল চলে যায় টাচলাইনের বাইরে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ডিফেন্সের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বাজে ডিফেন্ডিংয়ের কারণে সম্পূর্ণ আনমার্কড অবস্থায় ফ্রি হেডার থেকে গোল করে মালদ্বীপকে আগের ম্যাচে জেতান আলী ফাসির। আজও মালদ্বীপের স্কোরার তিনি। তপু বর্মণের ভুল পাস থেকে ম্যাচের ২৩ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন আলী ফাসির।
দ্বিতীয়ার্ধেও গোল হজম করতে পারত বাংলাদেশ। নাইজ হাসানের এরিয়াল পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেলেও আনমার্কড ফাসিরের হেডারটা আটকে দেন মিতুল। বল টাচলাইনের বাইরে পাঠিয়ে বিপদমুক্ত করেন সাদ উদ্দিন।
এই ম্যাচেও উইং ধরে আক্রমণ করে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। যদিও আজ একটু রয়েসয়ে আক্রমণে উঠেছে। তুলনামূলক রক্ষণাত্মকই খেলেছে। খেলা বিল্ড আপ হচ্ছিল একদম ডিফেন্স লাইন থেকে। সেই ধারাবাহিকতায় মালদ্বীপের বাম দিক থেকে আক্রমনে উঠে ফাহিম ফয়সালের পাস থেকে বল পান জনি। মোরসালিনের সাথে ওয়ান টু ওয়ানের পর প্রথমে বাম পায়ে শট নিতে চেয়েও চকিতে টার্ন করেন এই মিডফিল্ডার। সেই টার্নের পর মালদ্বীপের চার ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে বামদিকের টপ কর্ণারে লক্ষ্যভেদ করেন জনি।
৭০ মিনিটের পর থেকে বারবার আক্রমণে উঠলেও ফিনিশ করতে পারেননি বাংলাদেশী ফরোয়ার্ডরা। সেই ধারাবাহিকতায় ৮১ মিনিটে সাদের পাস থেকে বল পেয়ে রাকিবের থ্রু বল পান পিয়াস আহমেদ নোভা। ডানপাশ থেকে শট নিলেও মেরেছেন বাইরে। তবে শেষ পর্যন্ত ডিফেন্সের ভুল আর ফিনিশিংয়ের অভাবের এই বছরটা তপু-মোরসালিনরা শেষ করলেন জয় দিয়েই।