দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে হামলার মামলায় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (৩ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত এই আদেশ দেন।
ছয় দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক আবু সাইদ মিয়া শনিবার সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এসময় তাদের আইনজীবী শাহ মো. বাবর, জয়নাল আবেদীন মেজবাহসহ আরও অনেকেই জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আরিফ সোহেলের জামিন মঞ্জুর করেন এবং আসিফ মাহতাবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জামিন মঞ্জুরের পর সন্ধ্যার দিকে ঢাকার সিএমএম হাজতখানা থেকে কারামুক্ত হন আরিফ সোহেল।
পরে সাংবাদিকদের আরিফ সোহেল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। জাতীয় যে সমন্বয়ক কমিটি আছে, আমি সেখানেও আছি। কোটা সংস্কারের দাবিতে একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছিলাম। সেখানে সন্ত্রাসীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা করায় আমরা তার বিচার চেয়েও আন্দোলন চালিয়ে গেছি। আমরা বলেছি, শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে আমরা আন্দোলন বন্ধ করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আমবাগানে ভাড়া বাসায় থাকি। সেখান থেকে গভীর রাতে কিছু লোক এসে আমাক তুলে নিয়ে যায়। তারা নিজেদের ডিবি পরিচয় দেন। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে নিয়ে আসে। পরে দেখতে পাই, আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সমন্বয়ক হিসেবে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। অথচ আমাকে বনানী সেতু ভবনে, যেখানে আমি শেষ কবে গিয়েছি বা গিয়েছি কিনা, বলতে পারি না। সেতু ভবন ভাঙচুরের একটা মিথ্যা মামলা আমার নামে দেওয়া হয়। আমাকে ৬ দিনের রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। রিমান্ড শেষে এখন আমি জামিন পেয়েছি, আপনাদের সবার সমর্থনে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে জামিন পেয়েছি।
আরিফ সোহেল বলেন, একটা পরিষ্কার বার্তা জানিয়ে দিতে চায়— এসব হামলা, মামলা করে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। শহীদের যে রক্ত ঝরেছে, এর জবাব আমরা নেবো। এর জন্য যারা দায়ী, তারা রাষ্ট্রের যে পর্যায়ের ব্যক্ত্বিত্ব হন না কেন, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। জবাবদিহি করতে হবে জনগণের কাছে। তার আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। যত হামলা-মামলা আসুক, আমরা সব ফেস করবো। আমরা মরতে শিখে গেছি, শহীদ হতে শিখে গেছি। আমাদের আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।