সোহেল চৌধুরী, বার্মিংহাম প্রতিনিধি : বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ঐতিহাসিক স্মল হীথ পার্কে প্রতি বছরের মত উদযাপিত হলো ‘১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ’। এতে উপস্থিত ছিলেন বার্মিংহামের সহকারী হাইকমিশনার মো. আলীমুজ্জামান। যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিসেস মুনা তাসনিম উপস্থিত হতে না পারলেও প্রেরণ করেছেন বাণী।
২৮ মার্চ উদযাপন পরিষদ, বার্মিংহামএর সহ সভাপতি বশির মিয়া কাদির এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মসুদ আহমেদ পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে শপথ নেন সমবেতরা। সভায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ড. এম এ খালিক, তারকা রঞ্জন চন্দ, এম এ রশিদ ভূইয়া, মিসেস খালিক, মিসেস রশিদ, কামরুল হাসান চুনু, ফয়জুর রহমান চৌধুরী এমবিই, দিলাল উদ্দিন, সয়ফুল আলম, কয়সর আহমেদ, আব্দুস শুকুর, মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম, মুস্তাফিজুর রহমান দীপু শেখ, রহমত আলী, তাজুল ইসলাম, জয়নাল আহমেদ, মিসেস হামিদ। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বার্মিংহামের প্রবাসীদের ভূমিকা বিস্মৃতির অতল গহ্বর থেকে রক্ষার মহৎ উদ্দেশ্যে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা
২৮ মার্চের সংক্ষিপ্ত তথ্য:
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ জরুরীভাবে এক সভায় মিলিত হয়ে বাংলাদেশ একশন কমিটি গঠন করেন এবং সভা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ, বঙ্গবন্ধুকে অবিলম্বে মুক্তি ও স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে প্রকাশ্য শপথ গ্রহণের উদ্দেশ্যে ২৮ মার্চ বার্মিংহামের স্মল হীথ পার্কে এক বিরাট শপথ সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত শপথ সভায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে মিছিল সহকারে হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী বাঙালীরা যোগ দেন। সমাবেশ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই কিছুসংখ্যক উগ্র পাকিস্তানী ধারালো অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে হামলা চালালে তাৎক্ষণিকভাবে বীর বাঙালীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। উগ্র পাকিস্তানীদের হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে বেশ ক‘জন বাঙালী যুবক গুরুতর আহত হয় এবং কয়েকজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তিতে একশন কমিটির হস্তক্ষেপে পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দেয়।
উক্ত সমাবেশে (শপথ সভায়) বাংলাদেশের বাইরে (বহির্বিশ্বে) সর্বপ্রথম স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। তাছাড়া সমাবেশে শপথ সভার সংগঠকরা পাসপোর্ট (পাকিস্তানী) আগুনে পুড়ে ফেলেন এবং যুক্তরাজ্যসহ বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে (ইতোমধ্যে শুরু হওয়া) জনমত গঠন, বিভিন্ন শহরে সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ক্রয়ের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা ও প্রবাসী বাঙালীদের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। উক্ত শপথ সভার সংবাদ যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রে প্রচার ও প্রকাশিত হয়।