দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : মাত্র আট বছর বয়সে সিরিজ গল্পের বই লিখে দুনিয়া মাতালেন ইংল্যান্ডের লেস্টার শহরের বসবাস করা ঋককৃষ বিশ্বাস। তার সিরিজের নাম “এনিম্যাল এডভেঞ্জারস”। সিরিজে মোট চারটি বই লিখেছে। তার মধ্য থেকে দুটি বই ডাকি’স এডভেঞ্জার ওফ দি ফার্ম এবং মিলান’স এডভেঞ্জার ওফ দি রেইনফরেষ্ট। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বনামধন্য মানচিত্র প্রকাশন থেকে। বইগুলোর অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে প্রত্যেকটা বইয়ের পুরো গল্পই ছন্দে ছন্দে লেখা। বইগুলো বাংলাদেশে বই বিক্রির সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম রকমারীতেও পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া সারাবিশ্বের অনলাইন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অ্যামজনেও পাওয়া যাচ্ছে এই ক্ষুদে লেখকের সিরিজটি।
অল্প বয়সে সিরিজ লেখক ঋককৃষ বিশ্বাস ২৬ শে জুলাই ২০১৪ সালে চায়নার গোয়াংজু শহরে জন্মগ্রহন করে। বাংলাদেশে তার বাড়ি যশোরের মনিরামপুরে। বাবা ডঃ মানস বিশ্বাস এবং মা ডঃ মিতা বাগচী। দুই ভাই বোনের মধ্যে সে বড়। তার একটি ছোট বোন রয়েছে। বর্তমানে ঋককৃষ লেস্টার শহরের Uplands Junior L. E. A. D. Academy স্কুলে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে।
এ বিষয়ে ঋককৃষের বাবা ও মা বলেন, আমাদের জানামতে ঋককৃষ প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশী লেখক যে এতো অল্প বয়সে বাংলা এবং ইংরেজি মিলে মোট চারটি বই লিখেছে। আপনাদের দোয়া এবং আশীর্বাদ পেলে সে হতে পারে পৃথিবীর সবথেকে ছোট দ্বিভাষীক সিরিজ বই লেখক।
এত ছোট বয়সে সিরিজ লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে এই ক্ষুদে লেখকের বাবা-মা বলেন, ঋককৃষ দুই তিন বছর বয়স থেকেই A থেকে Z পযর্ন্ত প্রত্যেকটা অক্ষর দিয়ে কখনো জীব জন্তর নাম দিয়ে কখনো ফুল ফলের নাম দিয়ে এবং ছবি একে একে হাতের লেখা ছোট ছোট পকেট বই লিখত/বানাত। আবার যখন একটু বড় হলো চার পাঁচ বছর বয়সে সে স্কুল ছুটির সময়ে কোথাও ঘুরতে গেলে বাসায় এসে সেই সম্পর্কে একটা গল্প লিখে রাখতো ছবি একে একে, অনেকটা ছবি একে একে আগেকার দিনের ডায়েরি লেখার মতো। আর এভাবেই তার বই লেখার সুচনা।
তারা আরও জানান, কোভিডের সময় মাত্র ছয় বছর বয়সে সে একটি নভেল লেখা শুরু করে এবং অনেক পৃষ্ঠা লেখার পরে সে মনে করলো এটা ঠিক তেমনটা হচ্ছিল না যেমনটি সে চাচ্ছিল। তখন সে ঠিক করলো গল্প লিখবে কিন্তু এটা ঠিক আগে থেকে বুঝতে পারেনি যে গল্প গুলো ছন্দে ছন্দে লিখবে। কিন্তু ফাইনালী সে যখন লেখা শুরু করল ছন্দ মিলায়ে লিখে ফেলল “এনিম্যাল এডভেঞ্জারস” নামের জনপ্রিয় সিরিজটি বইটি।
ঋককৃষ সবসময় তার স্কুলের একজন অন্যতম পাঠক। সে বই পড়তে এতো বেশী ভালোবাসে যে কোথাও ঘুরতে গেলে সবার আগে বেশ কয়টা বই গুছিয়ে নেয় সাথে। ঋককৃষ লেস্টার এবং লন্ডনের বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খুব সুন্দর গান গওয়া এবং কবিতা আবৃত্তির জন্য খুব পরিচিত এবং প্রিয় একটি মুখ।
সিরিজটি বাচ্চাদের উদ্দেশ্য করে লেখা। সিরিজটিতে বাচ্চাদের বিভিন্ন প্রানী এবং তাদের আবাসস্থল সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় এবং মজাদার উপায়ে শেখানোর উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে/পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে বই পড়তে এবং লিখতে এবং ছবি আঁকতে ভালোবাসে। মহাকাশ গবেষণা নিয়ে ঋককৃষের অনেক আগ্রহ। বড় হয়ে সে একজন জ্ঞান, বিবেক, বিদ্যা, বুদ্ধি সম্পন্ন ভালো এবং মানবিক মানুষ হতে চায়।
ঋককৃষের প্রথম গল্পের সারমর্ম হলো – অলস হয়ে বসে না থেকে তোমার আশেপাশের পৃথিবীটা ঘুরে দেখ, তাতে তোমার সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়বে। বাইরের পৃথিবীতে যে কত অবাক করা বিষয় আছে, তোমার বুদ্ধি দিয়ে সেগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করো।