দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : গাজাবাসী তীব্র বোমাবর্ষণের আরেকটি রাত অতিবাহিত করল। গতকাল রবিবার রাতে গাজা উপত্যকা জুড়ে অবিরাম বোমা হামলা হয়েছে। গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির লক্ষ্য করে তীব্র হামলা চালানো হয়। এ হামলায় রাতে অন্তত ৫০ জন নিহত এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু বলে জানিয়েছেন উত্তর গাজার একটি হাসপাতালের কর্মকর্তারা। এদিকে গাজার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলা অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরাইল গাজার ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এবং আল-শিফা ও আল-কুদস হাসপাতালের নিকটবর্তী আবাসিক এলাকায় বোমা বর্ষণ করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার রাতে রাফাতে পাঁচটি আবাসিক টাওয়ারে আঘাত হানে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে মাটির সঙ্গে মিশে যায় সব ভবন। জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে, ভয়াবহ এই হামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনো অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
উদ্ধারের পরে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। রামাল্লা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক সারাহ খাইরাত জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় ইসরায়েল আরো শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে। পরিস্থিতি অশুভ কিছুর দিকে মোড় নিয়েছে। গাজার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ না করার জন্য সবাইকে সতর্ক করে বার্তাসহ পোস্টার লাগানো হয়েছে। সারাহ খাইরাত আরো জানিয়েছেন, ‘হামাস বা পশ্চিম তীরের যে কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সুতরাং বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি অন্য স্তরে চলে যাচ্ছে। যা সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে দেখা যায়নি। এদিকে ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি দক্ষিণ লেবাননেও রাতভর হামলা চালিয়েছে। ক্রমবর্ধমান সংঘাত পর্যালোচনায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাঁর শীর্ষ জেনারেলসহ যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফিলিস্তিনি মিডিয়া জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার কেন্দ্র ও উত্তর দিকে ইসরায়েলের হামলা কেন্দ্রীভূত হয়েছে। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের কাছে একটি বাড়িতে হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের দুই সপ্তাহের বোমাবর্ষণে কমপক্ষে চার হাজার ৬০০ লোক নিহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর সেখানে এক হাজার ৪০০ মানুষ মারা গেছে। হামাস ২১২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গেছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান রবিবার গভীর রাতে গাজায় ইসরায়েলের ‘নৃশংস অপরাধ’ বন্ধ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। হামাস এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে পরিকল্পিত স্থল আক্রমণের জন্য ইসরায়েল গাজার চারপাশের সীমান্তে ট্যাংক এবং সৈন্য মোতায়েন করে রেখেছে।