দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : চাঁদে অবতরণকারী বিশ্বের পঞ্চম দেশ হওয়ার আশায় জাপানের এইচ-আইআইএ রকেটটি চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামার পর এবার জাপানের রকেট চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিল। জাপান তাদের চন্দ্রযানের যে জাপানি নাম দিয়েছে তার ইংরেজি অর্থ ‘মুন স্নাইপার’। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার জাপান মুন স্নাইপার চন্দ্রযান ল্যান্ডার স্লিমসহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে।
জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জেএএক্সএ) জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী রকেটটি দক্ষিণ জাপানের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে উড্ডয়ন করেছে এবং সফলভাবে স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম) ছেড়েছে। রকেটটি তৈরি করেছে মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ। এর উড্ডয়নও পরিচালনা করেছে তারা। এ নিয়ে ২০০১ সালের পর থেকে ৪৭টি এইচ-আইআইএ রকেট উৎক্ষেপণ করল জাপান। মহাকাশযানটির এবারের চন্দ্রাভিযানের সাফল্যের সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশের কাছাকাছি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জাপান ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করবে না। জাপানের ‘চন্দ্রযান’ চাঁদের সামনের দিকে অর্থাৎ যে অংশটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান, সেখানে অবতরণ করবে। চাঁদের বিষুবরেখার ১৩ ডিগ্রি দক্ষিণে এবং দ্রাঘিমারেখার ২৫ ডিগ্রি পূর্বে রয়েছে শিওলি গিরিখাত।
তারই ঢালু অংশে নামার কথা জাপানের চন্দ্রযানের। এর আগে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে জাপান তিনবার এই চন্দ্রাভিযান স্থগিত করেছিল। জাপানের লক্ষ্য চন্দ্রপৃষ্ঠে তার লক্ষ্যস্থলের ১০০ মিটারের মধ্যে স্লিমকে অবতরণ করানো। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম) চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেএএক্সএ-এর প্রেসিডেন্ট হিরোশি ইয়ামাকাওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘স্লিম-এর বড় উদ্দেশ্য নির্ভুলতার সঙ্গে চাঁদে অবতরণ করা… চন্দ্রপৃষ্ঠে আমরা যেখানে পারি সেখানে অবতরণ না করে আমরা যেখানে চাই সেখানে অবতরণ করা।’
গত বছর চাঁদে অবতরণের দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল জাপানের। গত নভেম্বরে ওমোতেনাশি ল্যান্ডারের সঙ্গে জাক্সার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে ভেস্তে যায় চাঁদে অবতরণের চেষ্টা। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে চাঁদের পৃষ্ঠে নামার সময় বিধ্বস্ত হয় জাপানি স্টার্টআপ ইস্পেসের তৈরি হাকুটো-আর মিশন ১ ল্যান্ডারটি।
ল্যান্ডার স্লিম অবতরণের পর চাঁদের অলিভাইন শিলাগুলোর গঠন বিশ্লেষণ করবে। তবে স্লিম-এর ভেতর চাঁদে ঘুরে বেড়ানোর জন্য কোনো চন্দ্র রোভার নেই। এইচ-আইআইএ রকেটটি এক্স-রে ইমেজিং এবং স্পেকট্রোস্কোপি মিশন (এক্সআরআইএসএম) স্যাটেলাইটও বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। যা জেএএক্সএ, নাসা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার যৌথ প্রকল্প। স্যাটেলাইটটির লক্ষ্য মহাবিশ্বের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্লাজমা বায়ু পর্যবেক্ষণ করা, যা বিজ্ঞানীদের ছায়াপথের বিবর্তন বুঝতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।