দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অসুস্থ হলে মানুষ অনেক আশা-ভরসা নিয়ে ছুটে হাসপাতালের দিকে। কিন্তু বর্তমানে সে আশা-ভরসা অনেক সময় হতাশার হয়ে উঠে। তেমনি হয়ে উঠেছে লন্ডনে বসবাসরত দেশ-বিদেশ নিউজের বার্মিংহাম প্রতিনিধি ও সিনিয়র সাংবাদিক সোহেল চৌধুরীর ক্ষেত্রেও। হঠ্যাৎ অসুস্থ হয়ে উঠলে তিনি যান হার্টল্যান্ডন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। কিন্তু সেখানে গিয়ে যেই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তা তিনি নিজের ফেসবুকে তুলে ধরেছেন। নিম্নে পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
সোহেল আহমেদ চৌধুরীর স্ট্যাটাস
গত বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে, পেটের বাম পাশে প্রচন্ড ব্যথা সাথে কোমরের ব্যথার কারণে হার্টল্যান্ডন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেয়ে এন, এইচ, এস (NHS ) এর বর্তমান জরুরি বিভাগে আসা চিকিৎসা সেবার যে নিম্নমান ও খামখেয়ালিপনা যেটা আমাকে রীতিমত হতবুদ্ধি করেছে। নানা অদ্ভুত অভিজ্ঞার মুখামুখি হয়েছি বার বার, নার্স রক্ত পরিক্ষার জন্য দুইবার রক্ত নেওয়ার পর যখন দুই ঘন্টা পর এসে বলে রক্ত নেওয়াটা ভুল নিয়েছি আবার নিতে হবে, শুনে আমি অবাক, কিছু করার নেই। পেটের বাম পাশে হঠাৎ করে প্রচন্ড ব্যথা যা সহ্য হচ্ছে না সাথে কোমর ব্যথা।
নার্স আবার ডান হাতে বড় আকারে দুই মাথা ওয়ালা সুই আমার হাতের রগের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে রক্ত নিল তিন সিরিঞ্জের মত বোতলে। এরপর সিরিঞ্জ দিয়ে ঐ রগে লাগানো সুইয়ের একটির মধ্যে দিয়ে পানি পুশ করতে গিয়ে রগের বাহিরে চলে যাওয়ায় সুইয়ের আশপাশ ফুলে যাওয়ায় তা বন্ধ করে সুই খোলে ফেলে। আবার হাতের কব্জির উপর নতুন করে এই বড় সুই আমার রগের মধ্যে ঢুকায় যা দেখলে গা শিহরে উঠে। আবার দুই সিরিঞ্জ পানি, নার্স পুশ করে আমার হাতে লাগানো নতুন সুই দিয়ে। দুই হাতে বার বার বড় বড় নতুন সুই খোলতে আর লাগাতে গিয়ে আমার যে অবস্থা তা ব্যাখ্যা করার ভাষা নেই।
রাত তখন বারটা হবে (১২টা) হঠাৎ নার্স এসে আমাকে আবার ডাক দিল । তোমার আবার রক্ত নিতে হবে, তবে সেটা হবে ডান্ডা রক্ত তাই তোমাকে সাদা পানির মত একটি সেলাইন দিতে হবে।
অতীতে আমরা কি দেখেছি !! কাউকে সেলাইন দিতে হলে বেডের শুয়াইয়া সুন্দর করে স্ট্যান্ডের মধ্যে সেলাইন ঝুলানো থাকে। কিন্তু এন, এইচ, এস এখন এত গরিব বা দায়িত্বরত ব্যক্তিরা কি সুন্দর উনাদের দায়িত্ব পালন করতেছেন তাঁর কিছু ছবি দিলাম। আমি ছোট একটি প্লাস্টিক চেয়ারে বসে আছি অসহায়ের মত, প্রচন্ড ক্ষুদ্রার্থ ক্লান্ত। আর আমার সেলাইটা বাধা পর্দার স্ট্যান্ডের সাথে যেখানে পর্দা ঝুলানো থাকে। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে সেলাইন শেষ করে এর মধ্যে এক্স-রে শেষ করে এস, এ, ইউ (SAU) (সার্জিকাল এ্যাসেসমেন্ট ইউনিটে) রাত দুইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে শেষ পর্য্যায়ে মহান ডাক্তারসাব মৃতপ্রায় অবস্থায় আমাকে ছুটি দিলেন তখন আমার সুগার লেবেল ছিল ৫.৫ কারণ বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে আমার আর সুযোগ হয়নি কিছু খাবার বা পান করার।
আর হাসপাতালের তরফ থেকে যে সামান্য চা কফি ছিল সেটা বিকালের মধ্যে শেষ আর কেহ নতুন করে রেখে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি।প্রচন্ড ভিড় ছিল রুগির আর দায়িত্ব প্রাপ্ত নার্স ও ডাক্তার ছিল অন্যান্য দেশের যা সত্যিই ছিল হতাশার বিষয়। স্থানীয়রা নেই বললে চলে। NHS আজকের স্বাস্থ্য সেবার নমুনা দেখলে অবাক লাগে কি দেখলাম অতীতে আর এখন কি দেখতেছি। আমার দুই হাতের অবস্থা আর সেলাইন দেওয়ার আধুনিক পদ্ধতি গুলো আপনাদের জন্য, দেখুন ?!!