দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে দেশ ছাড়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন নাইজার। নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাকেরি সাঙ্গারি জানিয়েছেন, ফরাসি রাষ্ট্রদূত সিলভাইন ইত্তে নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণে সাড়া দেননি। এ ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারি জান্তা নেতারা এই ঘোষণা দেন। শুক্রবার ঘোষণাটি দেন জান্তা বাহিনীর নিয়োগ দেওয়া নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই বিষয়ে প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স বলেছে, ‘এই ধরনের বহিষ্কার আদেশের অধিকার, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেওয়া কোনো নেতার নেই।’ প্যারিস নাইজার সেনাদের অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বাজুমকে অবশ্যই অফিসে ফিরিয়ে দিতে হবে। ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘পুটশিস্টদের (অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেওয়া) এই অনুরোধ করার ক্ষমতা নেই, রাষ্ট্রদূতের অনুমোদন শুধুমাত্র বৈধ নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসে। নাইজারে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া নেতা জেনারেল আবদোরাহমানে চিয়ানি গত সপ্তাহে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিকে তিন বছরের মধ্যে বেসামরিক শাসনে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রাজধানী নিয়ামেতে পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক গোষ্ঠী ইকোওয়াসের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। আলোচনা ব্যর্থ হলে ইকোওয়াস গত মাসে প্রেসিডেন্ট বাজুমের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছিল। জান্তা প্রধান বলেছেন, নাইজার যুদ্ধ চায় না তবে বিদেশী হস্তক্ষেপ থেকে নিজেকে রক্ষা করবে। তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের আক্রমণ করা হয়, পার্কে আর হাঁটতে হবে না, যা কিছু লোক মনে করে।
জেনারেল চিয়ানি ভূমিবেষ্টিত দরিদ্র দেশটির ওপর ইকোওয়াসের আরোপিত ‘অবৈধ এবং অমানবিক’ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনার পুনরাবৃত্তি করেছেন। এর মধ্যে ছিল বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করা। যার ফলে নিয়ামে এবং অন্যান্য বড় শহরগুলো অন্ধকারে ডুবে যায়। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে ভ্যুত্থানকে দমনের জন্য আঞ্চলিক প্রচেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স সমর্থন করেছে।
উভয়েরই নাইজারে সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এই ঘাঁটিগুলো বৃহত্তর সাহেল অঞ্চলে জিহাদি গোষ্ঠীগুলোকে দমনের প্রচেষ্টার অংশ।
নাইজারের সেনাবাহিনী গত ২৬ জুলাই ফ্রান্স-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এতে নাখোশ হয় প্যারিস। নাইজারের সামরিক জান্তা অভিযোগ করছেন, বাজুমকে পুনরায় ক্ষমতায় বসাতে ফ্রান্স সরকার নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে চায়। গতমাসে সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার পর থেকে নাইজারের জনগণ এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার রাজপথে মিছিল করে সামরিক শাসকের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন। তারা পশ্চিমা-সমর্থিত সাবেক বাজুম সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে স্লোগান দেন।