দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে দুদিন ধরে সামরিক অভিযান শেষে ইসরায়েল তাদের সেনা প্রত্যাহারের পর ফিলিস্তিনিরা শরণার্থী শিবিরে নিজেদের বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। ইসরায়েলি হামলায় শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক ধ্বংসের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এই শিবিরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি থাকে। শিবিরের ভবনগুলোতে ইসরায়েলি হামলায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
গাড়িগুলো দুমড়ে-মুচড়ে গেছে এবং মাটিতে এখানে-সেখানে ভাঙা কাচ আর বুলেটের খোসা পড়ে আছে। ইসরায়েলি হামলায় যে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয় তাদের স্মরণে জানাজায় এবং এক শোক মিছিলে যোগ দেয় হাজার হাজার মানুষ।নিজের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখে কাঁদছিলেন ফাতিনা আল-ঘৌল। কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম।
তা নাহলে আমার মেয়েদের ও আমাকে হত্যা করা হত। ফাতিনা বলেন, ‘আমার বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সবকিছু ভেঙে গেছে এবং পুড়ে গেছে। সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফাতিনা তাদের এমন অবস্থার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের বাড়ি। আমরা ভয়ের মধ্যে বসবাস করছি। এটি রক্ষা করার জন্য আমরাই একমাত্র বাকি। ’তিনি বলেন, ‘আজ রাতে আমরা রাস্তায় ঘুমাবো।
এমনকি আমরা ঘরের ভেতরেও বসতে পারব না। আমাদের বা আমাদের প্রতিবেশীদের জন্য আর কোথাও যাওয়ার নেই। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযানের সময় ফাতিনা আল-ঘৌলের সঙ্গে আরও নয়জন নারী তাদের পরিবার নিয়ে শিবির ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। ইসরায়েলি সেনাদের শিবির ছাড়ার পর তারা আবার নিজেদের বাড়ির দিকে ফিরছেন। গত সোমবার ভারী অস্ত্রসস্ত্রসহ ১ হাজারের বেশি সেনা শহরটিতে আসে। এরপর শুরু হয় তাদের ধ্বংসযজ্ঞ। যা বুধবার (৫ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত চলে।
ইসরায়েলিদের এবারের হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অপরদিকে ফিলিস্তিনিদের হামলায় প্রাণ গেছে এক ইসরায়েলি সেনার। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এটিকে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা বলেছে, এই অঞ্চলে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্রের দোকান এবং উৎপাদন কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযানকে ‘জেনিনের জনগণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ’ বলে নিন্দা করেছে।