দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ভারতের মণিপুর রাজ্যে অন্তত এক হাজার ৭০০ ঘর জ্বলেছে। গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। নিহত অন্তত ৬০। গত সপ্তাহে সংঘাতের পর অবশেষে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। হতাহতের হিসাব দেওয়ার পাশাপাশি তিনি রাজ্যের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সবার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ঘরছাড়াদের দ্রুত ফেরানো হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। তিনি বলেন, সহিংসতা থামাতে কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য করেছে। এদিকে মণিপুরের প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে এখনো উদ্বাস্তুশিবিরে বহু মানুষ বসবাস করছেন। আসামের কাছাড় জেলায় ক্যাম্প করে আছেন উদ্বাস্তুরা। তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে বলে আসাম সরকার জানিয়েছে।
গত বুধবার ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয় মণিপুরে। ওই দিন রাজ্যের চূড়াচাঁদপুরে ছাত্রসংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুর মিছিল বের করে। রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইগোষ্ঠী নিজেদের তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। তার বিরোধিতা করে ছাত্রসংগঠন মিছিল বের করে। আর সেই মিছিল ঘিরেই তীব্র সংঘাত শুরু হয়। হত্যা, আগুন জ্বালানোর ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়। চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে ১৪৪ ধারা এখনো জারি আছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরছাড়াদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। অনেকেরই বাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ হাতে করে তারা পার্শ্ববর্তী রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন। উপজাতিভুক্ত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অউপজাতি গোষ্ঠীর সংঘর্ষ এর আগেও হয়েছে মণিপুরে। মেইতেই বহুদিন ধরেই নিজেদের তফসিলি উপজাতিতে অন্তর্ভুক্ত করার আন্দোলন চালাচ্ছে। এই রাজনৈতিক প্রশ্ন নিয়ে অবশ্য এদিন কোনো মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং।