দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : লেবাননের অভ্যন্তরে এবং গাজা উপত্যকা জুড়ে ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে। লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার পর এই হামলা চালায় তারা। এই হামলার জন্য ইসরায়েলিরা হামাসকে দায়ী করেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) গভীর রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ‘দ্যা স্ট্রং হ্যান্ড’ নামক অভিযানের মাধ্যমে গাজায় বিমান হামলা চালায়। এবার লেবাননে হামলা চালিয়েছে তারা।
ফিলিস্তিনের অধিকৃত জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলা চলানোর জেরে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর জেরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাজায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। গাজায় বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা এখন ‘লেবাননে হামলা’ করছে।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) তরফ থেকে বলা হয়, হামাসের সন্ত্রাসী এলাকা দক্ষিণ লেবাননে আঘাত হেনেছে তারা। এই সপ্তাহের শুরুতে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশ রাতে নিয়মিতভাবে অভিযান চালানোর পর চারদিকে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ বলেছেন, ইসরায়েলিরা হামলা চালালে ফিলিস্তিনিরা অস্ত্র নিয়ে বসে থাকবে না।
শুক্রবারের একটি বিবৃতিতে আইডিএফ টুইট করে জানায়, দক্ষিণ লেবাননে হামাসের সন্ত্রাসী অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েল এ হামলার ঘটনার জন্য হামাসকে দায়ী করে আইডিএফ আরো বলেছে, লেবানন থেকে হামাসকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।
এদিকে হামাস জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে কারা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে সে বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। গত ১৭ বছরের মধ্যে ইসরায়েলে লেবানন থেকে সবচেয়ে বড় হামলা ছিল এটি। ইসরায়েলের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে লেবানন থেকে ছোড়া ৩৪টি রকেটের মধ্যে বেশিরভাগ ধ্বংস করা হয়েছে। তবে এই রকেট হামলায় ইসরায়েলে ছয়টি ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজাতে বিমান হামলা বাড়িয়েছে। গাজার চারটি নতুন জায়গায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ১০ মিনিটের মধ্যে আঘাত হানে। ফিলিস্তিনি জঙ্গিরাও দক্ষিণ ইসরায়েলে নতুন করে আবার রকেট ছোড়ে। এ সময় চারদিকে সতর্কীকরণ সাইরেন বেজে ওঠে।
একটি টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলের প্রাধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা আমাদের শত্রুদের আঘাত করব এবং তাদের এই আগ্রাসনের জন্য মূল্য দিতে হবে।’ তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলে, ‘আমরা চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে সঙ্কল্পিতভাবে কাজ করব যারা সহিংসতা ছড়ায়।’
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি দেশের ভূখণ্ড থেকে যে কোনো ধরনের সামরিক অভিযানের নিন্দা করেছেন। তিনি জানান, এই ধরনের হামলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলে। লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী ইউনিফিল বলেছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় সবাইকে শান্ত এবং উত্তেজনা এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউনিফিল।