দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ঢাকা ও দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে এ পাইপলাইন উদ্বোধন করেন তারা। বাংলাদেশের পার্বতীপুরে স্থাপিত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের রিসিভ টার্মিনালে জ্বালানি তেল পাঠানোর কার্যক্রম উদ্বোধনের পর থেকেই এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি তেল আসা শুরু হবে।
ভারতের শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত প্রায় ১৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের পুরোটাই নির্মাণ হয়েছে ভারতের অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায়, যা দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা হিসেবে দেখছে জ্বালানি বিভাগ। ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক টিপু সুলতান জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে রিসিপ্ট পাইপলাইন টার্মিনালের প্যান্ডেলে স্থাপিত টিভি পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকেল ৪টায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয়।
ভারতের আসাম রাজ্যের নুমালীগড় রিফাইনারির শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর হয়ে পার্বতীপুর ডিপোতে সংযুক্ত হয়েছে পাইপলাইনটি। শিলিগুড়ির নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির জন্য বিপিসির পার্বতীপুরের রিসিভ টার্মিনালটি এখন প্রস্তুত।
দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ডিজেল সরবরাহ ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পার্বতীপুরে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল (ডিজেল) আমদানির রিসিভ টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। গত ১০ মার্চ শুক্রবার প্রকল্পের রিসিভ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ; জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়ইরুজ্জামান মজুমদার; পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জরেন্দ্র নাথ ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ।
পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার পাইপলাইনের সঙ্গে শিলিগুড়ি টার্মিনাল থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ১২৫ কিলোমিটার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার ৩০৩ কোটি রুপি ও বিপিসি ২১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ১০ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপ দিয়ে প্রাথমিক অবস্থায় বছরে ২ লাখ টন তেল পাওয়া যাবে। পরবর্তীকালে ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল পরিবহন করা সম্ভব হবে।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি এ জ্বালানি পাইপলাইন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৫ বছর মেয়াদি এ প্রকল্প ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড এবং বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।