দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ-পদস্থ প্রতিনিধি দল বুধবার কাবুলে গেছেন। সেখানে তারা নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিষয়ে অন্তর্বর্তী আফগান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।পররাষ্ট্র দপ্তর টুইটে বলেছে, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ-পদস্থ প্রতিনিধিদল আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সন্ত্রাস-বিরোধী ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আজ বুধবার কাবুলে গেছেন।’
আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ছবিগুলোতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের সঙ্গে দেখা করতে দেখা যায়। এ ছাড়াও ছবিগুলোতে পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স মহাপরিচালক লেফট্যানেন্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুম, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ মাজিদ খান, আফগানিস্তানের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) উবাইদুর রহমান নিজামনি এবং আফগানিস্তানে নিযুক্ত পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিককে দেখা গেছে। আফগান মন্ত্রী পরিষদের (প্রধানমন্ত্রী) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষ অর্থনৈতিক সহযোগিতা, আঞ্চলিক সংযোগ, বাণিজ্য এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছে।
মোল্লা বারাদারকে উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান ও আফগানিস্তান প্রতিবেশী এবং দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত। আফগানিস্তান পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায়, কারণ এই ধরনের সম্পর্ক উভয় দেশের স্বার্থে প্রয়োজন।’বারাদার উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা সমস্যাগুলো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করবে না এবং রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সমস্যা থেকে আলাদা রাখা উচিত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগান উপ-প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলকে পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে আটক আফগানদের মুক্তি দিতে বলেছেন। এ ছাড়াও তিনি জরুরি রোগীদের জন্য বিশেষ বিবেচনায় তোরখাম এবং চমন-স্পিন বোল্ডাক সীমান্তে আফগান যাত্রীদের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান। পাকিস্তানি পক্ষ আফগানিস্তানকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিনিধি দল বলেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কমিটিগুলোকে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করতে বলা হবে।
প্রসঙ্গত, দুই দেশের মধ্যে প্রধান বাণিজ্য এবং সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট পাকিস্তান-আফগানিস্তান তোরখাম সীমান্তে কর্মকর্তাদের মধ্যে সংলাপ শুরুর বিষয়ে একটি অচলাবস্থার পর মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের জন্য সেই বৈঠক বন্ধ ছিল। এ ছাড়াও এই সপ্তাহের শুরুতে আফগান তালেবানরা পাকিস্তানকে তার প্রতিশ্রুতি থেকে বিরত থাকার অভিযোগ এনে সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়।
তোরখামের আফগান তালেবান কমিশনার বলেছিলেন, সীমান্তটি ভ্রমণ এবং ট্রানজিট বাণিজ্যের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মৌলভি মোহাম্মদ সিদ্দিক টুইটে লিখেছেন, ‘পাকিস্তান তার প্রতিশ্রুতি পালন করেনি এবং তাই (আমাদের) নেতৃত্বের নির্দেশে গেটওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
তবে অসমর্থিত গণমাধ্যম প্রতিবেদন অনুসারে, অন্তর্বর্তী আফগান সরকার পাকিস্তানে চিকিৎসার জন্য আফগান রোগীদের ভ্রমণের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে বিরক্ত হয়েছিল। মঙ্গলবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তোরখাম সীমান্তে গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া যায়। সেখানে একজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন।