নিজস্ব প্রতিবেদক : বালাদেশে ১৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে নিজস্ব কোনো হাসপাতাল ভবন নেই। শিক্ষক সংখ্যা অপ্রতুল। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় চলছে পাঠদান। কলেজ ক্যাম্পাস নেই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। নেই ছাত্রাবাস ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য হোস্টেল সুবিধা। কোথাও কলেজের অবকাঠামো থাকলেও প্রয়োজনীয় লোকবল ও শিক্ষা উপকরণের সংকট আছে। এ অবস্থায় ধার করা চিকিৎসাকেন্দ্র হিসাবে জেলা পর্যায়ের জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে হাতেকলমে শিখতে হচ্ছে নবীন চিকিৎসকদের। এসব কারণে ১৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দক্ষ চিকিৎসক হয়ে ওঠাই চ্যালেঞ্জ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে- সরকারি পাবনা মেডিকেল কলেজ, আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ (নোয়াখালী), কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ (জামালপুর), রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ (হবিগঞ্জ), নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ (গোপালগঞ্জ), শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ (গাজীপুর), পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ (সুনামগঞ্জ) এবং শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ (গোপালগঞ্জ) নির্মাণাধীন। এগুলোর ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল কিছুই নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শির্ক্ষার্থীরা অস্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে লেখাপড়া এবং অন্য হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল পাঠ নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন- হাসপাতাল ছাড়া মেডিকেল কলেজ চালানো যায় না। যেসব প্রতিষ্ঠানের হাসপাতাল নেই, সেখানে সাময়িক সময়ের জন্য জেলা সদরের হাসপাতাল ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সব মেডিকেলেরই নিজস্ব হাসপাতাল হবে। চারটা মেডিকেলের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এখন নিজেরাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাজস্ব বাজেট থেকে এসব হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
মেডিকেল কলেজ পরিচালনা আইন অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমিতে হাসপাতাল থাকা বাধ্যতামূলক। বর্তমানে দেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। এর মধ্যে ১৮টিই নানা সমস্যায় জর্জরিত। এগুলো স্থাপন ও পরিচালনায় বিদ্যমান আইনকানুনও উপেক্ষা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ৩৫০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছেন। এ হিসাবে কলেজগুলোয় ৫ বছরের একাডেমিক (প্রাতিষ্ঠানিক) শিক্ষাজীবনে ২১ হাজার ৭৫০ জন লেখাপড়া করছেন। তাদের মধ্যে যারা ওই ১৮টি কলেজের শিক্ষার্থী, তারা নানা সমস্যার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন। তারা স্বাস্থ্য শিক্ষার মতো মৌলিক বিষয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চেয়ে যোগ্যতা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছেন। তারা ভবিষ্যতে জনগণকে কী সেবা দেবেন, তা নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।