দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতিগত সংঘর্ষে উত্তাল ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্য। কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে এই সংঘর্ষে ইতিমধ্যে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিগত কয়েক মাস রাজ্যটি সাময়িকভাবে শান্ত থাকলেও, চলতি মাসের শুরু থেকে একের পর এক সহিংস সংঘর্ষের জেরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এবার ড্রোন ও রকেট দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে যুদ্ধে প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি যোদ্ধা রাজ্যটিতে ঢুকে পড়েছে।এবার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে সেই গুঞ্জনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, তারা একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পেয়েছেন যেখানে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও ড্রোনসহ যুদ্ধে প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি যোদ্ধা প্রবেশের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কুলদীপ সিং বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, এসব যোদ্ধারা মিয়ানমারে জঙ্গলে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তারা অস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করছে।
কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, এসব যোদ্ধা ৩০ জনের গ্রুপে ভাগ হয়ে মণিপুরে প্রবেশ করেছে। তারা এই মাসের শেষদিকে মেইতিদের গ্রামে বেশ কয়েকটি হামলার পরিকল্পনা করে থাকতে পারে। এই গোয়েন্দা তথ্য ১০০% সত্য বলে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং।
ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান অস্থিরতার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানাতে গত সোমবার ইমফালে সংবাদ সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এসময় প্রমাণ হিসেবে সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া একজন বিদেশির কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সহিংসতার ঘটনায় সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আসাম রাইফেলস। ওই ব্যক্তি কুকি ন্যাশনাল আর্মির (বার্মা) সদস্য এবং মিয়ানমানের নাগরিক বলে জানা যায়।
এন. বিরেন সিং বলেন, ‘সহিংসতার শুরুতে মণিপুরের একটি বড় অংশ বিশ্বাস করতে পারেননি এটি বিদেশিদের কাজ। এবার তো বোঝা গেল।’ এ সময় বিদেশি চক্রান্তকারী ও অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আসাম রাইফেলসের প্রশংসা করেন তিনি। এন. বিরেন সিং আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি বারবার এ কথা বলে আসছি যে, এই চলমান সংকটে বিদেশিদের মদদ রয়েছে। তারা এখানে রসদ যোগাচ্ছে।’