দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারের শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী।
এ সময় সংসদে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরে তা সংশোধন করে করা হয় ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেট দেশের ৫৩তম এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২৫তম বাজেট। ১৯৭২ সালে তাজউদ্দীন আহমেদ অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের প্রথম বাজেট পেশ করেন।
সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের দর্শনকে সামনে রেখে এবারের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটকে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট বলে উল্লেখ করেছেন। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যসহ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকট হতে উত্তরণ, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের সফল বাস্তবায়ন, মেগা প্রকল্পসমূহের কাজ সম্পন্ন করা, সামাজিক নিরাপত্তার আওতা সম্প্রসারণ, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষিখাতে ভর্তুকি সর্বোপরি উচ্চ প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখাকে বিবেচনায় নিয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
প্রস্তাবিত রাজস্ব আয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে, রাজস্ব প্রাপ্তি ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত ব্যয়ের পরিমাণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন: প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪.৬ শতাংশ।
ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার ১০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে যোগান দেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।