দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : সিলেটে লন্ড্রি ব্যবসায়ী সোহেল আহমদকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির দণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেয়। রায়ে অপর আসামির সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ডেথ রেফারেন্সের শুনানি নিয়ে এই রায় দেয় উচ্চ আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজা আল ফারুক ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এস এম শফিকুল ইসলাম। হাইকোর্টের রায়ে সিলেটের মোগলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁওরের কাজল মিয়ার মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ইসলাম উদ্দিন ওরফে ইসলামকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয়।
মামলাসূত্রে জানা যায়, ইসলাম উদ্দিনের এক বোনকে বিয়ে করেছিলেন সিলেট নগরের গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমদ। ইসলাম এ বিয়ে মেনে নেননি। এ ক্ষোভ থেকে ইসলাম ও তার বন্ধু কাজল ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে সোহেলকে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বানাগাঁও এলাকার দালুয়ারবন্দ হাওরে নিয়ে যান। সেখানে ইসলাম ও তার বন্ধু কাজল সোহেলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে মরদেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন। সেটি অন্য জায়গায় ফেলে দিয়ে মরদেহ পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে দেন। পরদিন পুলিশ সোহেলের মাথাটি হাওর এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় সোহেলের বাবা জয়নাল আবেদীন মামলা করলে পুলিশ ইসলাম ও কাজলকে গ্রেপ্তার করে। মামলার দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেন, ইসলাম তার বোনকে বন্ধু কাজলের কাছে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এ চাওয়া পূরণ না হওয়ায় তারা সোহেলকে হত্যা করেন। এই মামলায় ২০১১ সালের ২৬ জুন আদালতে ইসলাম ও কাজলসহ নয় জনকে অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল বিচার শেষে সিলেটের বিশেষ দায়রা জজ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মফিজুর রহমান ভুঞা দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অপর সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ইসলাম ও কাজল আপিল ও জেল আপিল করেন। গত ৪ অক্টোবর সোমবার এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়।