দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : দিন যত যাচ্ছে, ততই বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এতে মোবাইলে অর্থ লেনদেনের পরিমাণও বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মাসিক লেনদেন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা ৯৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন করেছেন। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তবে, ডাক বিভাগের সেবা নগদের তথ্য এখানে যোগ করা হয়নি। নগদের তথ্য যোগ করলে আরও ২৩ হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেনের অঙ্ক বাড়বে। সে হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আলোচ্য মাসে লেনদেন দাঁড়াবে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত যেকোনো স্থানে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। গ্রাহক সংখ্যার সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। এছাড়া, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষ সরাসরি লেনদেনের চেয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশলেস লেনদেন বেশি নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। পাশাপাশি, এখন শ্রমিকদের বেতন-বোনাস, সরকারের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন ভাতা ও অনুদান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালের অক্টোবর মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজারে। এর মধ্যে গ্রামে ১০ কোটি ৪০ লাখ এবং শহরে ৮ কোটি ৩৫ লাখ গ্রাহক। নিবন্ধিতদের মধ্যে পুরুষ ১০ কোটি ৮৬ লাখ এবং নারী ৭ কোটি ৮৪ লাখ। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ২১ হাজার ৮০৩ জনে। মোবাইলে আর্থিক সেবায় গত অক্টোবরে মোট ৪৪ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার ৩৬০টি লেনদেনের মাধ্যমে ৬৭ হাজার ৯৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদান-প্রদান হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ২৭ হাজার ৭০৬ কোটি। এ সময়ে উত্তোলন করা হয়েছে ২৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। অক্টোবর মাসে এমএফএসে ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ২৫ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২২৮৩ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৩৬০ কোটি টাকা।