দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চাকরিকালে তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে সেগুনবাগিচাস্থ দুদক কার্যালয়ে কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সচিব জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অভিযোগ অনুসন্ধান করে কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। কমিটির সদস্যরা হলেন- কমিশনের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।
সচিব জানান, ৩১ মার্চ সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ১ ও ২ এপ্রিল এমন সংবাদ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। উক্ত অভিযোগসমূহের বিষয়ে দুদকের দৃষ্টিগোচর হয়। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদক বিধিমালা ২০০৭ এবং ৩ বিধির আওতায় তার বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু করা হয়।
তিনি বলেন, দুদক আইন-২০০৪ এর ১৫ নং ধারার বিধান অনুযায়ী বর্ণিত অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৮ এপ্রিল কমিশনের সভায় বেনজীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদিত হয়। সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি মোতাবেক নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান সমাপ্ত করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
একদিন আগে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদক অনুসন্ধান শুরু না করলে, তিনি হাইকোর্ট যাবেন বলেও জানান। রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সেগুনবাগিচাস্থ দুদক কার্যালয়ে এই আবেদন জমা দেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনে সুমন বলেন, বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর পর অবসরে যান ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর। অবসরের পর বেনজীর আহমেদ চাকরিকালীন স্ত্রী ও মেয়ের নামে অনেক সম্পদ গড়েছেন। যা তার জ্ঞাত আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আবেদনে তিনি বলেন, বেনজীর ও তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ এবং কন্যা সন্তান তাদের বৈধ আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে বেনজীর তার পদের অপব্যবহার করে উল্লিখিত সম্পত্তি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অর্জন করেছেন।
আবেদনে তিনি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, কন্যা ফারহিন রিশতা বিন্তে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের অবৈধ সম্পদ বিষয়ে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন করেন। সুমনের আবেদন নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর একদিন পর সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত জানালো।