দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : দুই পক্ষের বিরোধ না মেটায় এবারও তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় বার্ষিক সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্বে জুবায়ের আহমদ গ্রুপ আগামী ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্বে ওয়াসিফুল ইসলাম গ্রুপ ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি ইজতেমার আয়োজন করবেন। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ তথ্য জানান। তবে সীমিত পরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইজতেমা করতে হবে এবং টিকা নেওয়া ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
সভায় বিশ্ব ইজতেমার স্থান টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর ও আশপাশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারী জন্য গত দুবছর ঐতিহাসিক বিশ্ব ইজতেমা হয়নি। এবার কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আগামী ২০২৩ সালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আকারে টঙ্গীর মাঠে বিশ্ব ইজতেমা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ইজতেমা করতে গিয়ে মতবিরোধ চলছিল এবং এখনও আছে। মতবিরোধ নিরসনে এর আগে আমরা দুই ভাগে ইজতেমা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম, সেভাবে তারা সুম্পন্ন করেছে। এবারও ঠিক সেভাবেই হবে।
এক দলের নেতা হলেন মাওলানা জুবায়ের আহমদ, অন্যদলের নেতা হচ্ছেন মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম। তারা দুজনেই আগে একসঙ্গে তাবলিগ করতেন, এখন দুজন দুপ্রান্তে চলে গেছেন। তাদেরকে বৈঠকে ‘দাওয়াত’ দিয়ে আনা হয়েছিল জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ইজতেমাটা যাতে সুসম্পন্ন ও সুন্দরভাবে হয়, সেই অনুরোধ করেছিলাম। পাশাপাশি আরও অনুরোধ রেখেছিলাম- আপনারা দুজন এক হয়ে আপনারা সিদ্ধান্ত দেন- কে আগে করবেন, কে পরে করবেন, কিংবা একসঙ্গে করতে পারবেন কি না। তারা একমত হতে পারেননি। কে আগে করবেন, কে পরে করবেন- সেই বিষয়েও একমত হতে পারেননি। আমাদের ওপর সিদ্ধান্তের ভার দিয়ে দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমরা কোনো কিছু পরিবর্তন করব না। গতবার যেভাবে হয়েছে, এবারও ঠিক সেভাবে ইজতেমাটা সুসম্পন্ন করবেন। তারা উভয়েই মেনে নিয়েছেন। আমাদের সিদ্ধান্তে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। দুবারে আয়োজন করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ইজতেমা করার জন্য তাদের বলা হয়েছে। তারা সেটাই করবেন। সীমিতভাবে করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করা হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রথমেই বলেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে, একটু দূরে বসা, মাস্ক পরা এবং টিকা নেওয়া ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না এ ধরনের কাজগুলো করতে হবে। আমরা নেতাদের কাছে আবেদন করেছি, গতবার যে জেলা থেকে যত লোক এসেছেন, এবার যাতে এ সংখ্যাটা কমিয়ে আনেন। প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষে সংশ্লিষ্টরা প্রশাসনকে মাঠ বুঝিয়ে দেবেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বাকি সময়টুকু মাঠ তৈরি করে দ্বিতীয় দফার জন্য তৈরি করা হবে।
সভায় ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।