1. bazmedialink7@gmail.com : Baz Alam : Baz Alam
  2. mdkaif01133@gmail.com : md :
  3. talhanrcc2014@gmail.com : Talha : MD TALHA
  4. deshbidesh2022@gmail.com : Tuhin Ahmed : Tuhin Ahmed
পীর হাবিব রাজকীয় বিচরন করলেন তারপর বীরের বেশে চলে গেলেন : জুয়েল সাদাত - DeshBideshNews
November 24, 2024, 2:04 am
 

পীর হাবিব রাজকীয় বিচরন করলেন তারপর বীরের বেশে চলে গেলেন : জুয়েল সাদাত

  • Update Time : Thursday, February 10, 2022
  • 439 Time View

কিছু কিছু মানুষ, মারা যাবার পর জানান দেয় তারা কেমন ছিলেন৷ আর সেটাই সৃষ্টিকর্তা আমলে নেন। ভাল মন্দের একটি সংমিশ্রনে মানুষের জীবন। উঠা নামা করে জীবনের গতি। বলছিলাম পীর হাবিবের কথা, এলেন গভীরভাবে রাজকীয় বিচরন করলেন তারপর বীরের বেশে চলে গেলেন। তিনি অসুস্থ হবার পরই জানান দিয়েছিলনে, মানুষের ভালবাসা তার সারা অঙ্গে।

মফস্বল থেকে উঠে আসা একজন সাধারন সংবাদকর্মী জাতীয়ভাবে বিস্ফোরন ঘটিয়েছিলেন। টক শোতে যখন কথা বলতেন, মনে হত আমি কথা বলছি। যখন নানান ডাইমেনশনে লিখতেন মনে হত আমার মনের কথা। অনেক সুন্দর করে ঘটনাগুলো, ইতিহাসগুলো তুলে ধরতেন। যার কারনে সাধারনের গন্ডি পেরিয়ে অসাধারন হয়ে গিয়েছিলেন।

পীর হাবিবুর রহমান, নামটি একটি ইনস্টিটিউশন হয়ে গিয়েছিল। সুনামগঞ্জের সাদা মাটা একটি পরিবারের সন্তান, ঢাকার সাংবাদিক পীর হাবিব। পুর্ব পশ্চিম ডট কম নামে একটি ওয়েব সংবাদপত্রে জড়িত ছিলেন। সেটার উদ্ভোধনী অনুষ্টানটা ঢাকার সংবাদ পত্রের জগতে নাড়া দিয়েছিল। তারপর সেটা ছেড়ে আসার পর, নিউজ পোর্টালটা দাড়াতে পারেনি। এটা বলছি এই জন্য্ পীর হাবীব নাই তাই পুর্ব পশ্চিমটাই পড়ে গেল।

তারপর বাংলাদেশ প্রতিদিনে জড়িত হন। সেখানে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন নির্বাহী সম্পাদক। প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। একজন অসাধারন পরিশ্রমী সাংবাদিক পীর হাবিব অসুস্থ হন। অসুখটা সাধারন ছিল না৷ দীর্ঘদিন বিদেশে চিকিৎসা নেন । সবাই দোয়া করেন, একটি সময় ভাল হয়ে ফিরে আসেন।

আবার সোস্যাল মিডিয়ায় সরব জানান দেন। দুদিন পর পরে ছোট পরিবারেরর নানান ছবি দিতেন। সুখেই কাটছিল তার নতুন জীবনটা । আমরা সবাই স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়ি।

আমরা ভেবে নিলাম তিনি পূর্ণ সুস্থ । তারপর যেটা হল সেটার জন্য্ প্রস্তুুত ছিল না দেশবাসী। সবাই কাঁদছে, সিলেটের মানুষ, সুনামগঞ্জের মানুষ, ঢাকার পুরো সাংবাদিক সমাজ কাঁদছে। দেশ একজন বরেণ্য সাংবাদিক ও মুক্তচিন্তার অভিভাবক হারালো। তিনি মানবিক মানুষ ছিলেন। মানুষকে হেল্প করতেন। খুব সুন্দর করে হাসতেন। কাউকে আঘাত করে কথা বলতেন না। সত্য যারা নিতে পারত না, তারাই হয়ত আহত হতেন।

সুনামগঞ্জের নক্ষত্ররা যখন বিদায় নেয় তখন পাহাড়ের সাথে আকাশটাও কাঁদে। রাতের জোসনার আলোটাও হারিয়ে যায়। যেমনটা হয়েছিলো সুনামগঞ্জের সাবেক মেয়র মমিনুল মউজদীন এর বিদায় বেলায়। আজকের আকাশটাও তেমন ছিলো। বিদায় নিয়েছেন দেশবরেণ্য অগ্রজ সাংবাদিক পীর হাবীব ভাই। জল জোসনার শহর সুনামগঞ্জ তার প্রিয় শহর ছেড়ে, না ফেরার দেশে চলে গেলেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন। কিছু কিছু কুলাঙ্গার এর দেখা পেলাম, যারা পীর হাবিবের মুত্যুতে খুশি। এদের সংখ্যা হাতে গোনা কতটা হবে, ১০/২০ জন। এই সব কুলাঙ্গার সারা জীবনই কুলাঙ্গার থাকবে।

একজন সাংবাদিক সবার প্রিয় হবেন না। তাকে সত্যের মুখোমুখি হতে হয়, তাই বিরাগভাজন হবেন অনেকেরই।

পীর হাবীর ছিলেন- একজন যুক্তি তর্কের মানুষ। তার লেখনি, কথা বার্তা এবং সৃদৃঢ় অবস্থান খুব কম সময়ের জনপ্রিয়্তার শীর্ষে পৌছে দিয়েছিল তাকে। মুক্ত মন মানসিকতার একজন আপোষহীন সাংবাদিকের নাম ছিল পীর হাবিব।

চমৎকার গুছিয়ে কথা বলতেন, সাহায্য করতেন। অনুজ সকল সাংবাদিকদের অনুপ্রেরনা দিতেন। নঈম নিজাম ও পীর হাবীব দু’জন চমৎকার জুটি ছিলেন। তাদের দু’জনের কারনে বাংলাদেশ প্রতিদিন আজ একটি শীর্ষ কাগজ। তার অসাধারন লেখনি, যে কাউকে সম্মোহন করে রাখত। তিনি বাংলাবাজার, যুগান্তর, পুর্ব পশ্চিম, বাংলাদেশ প্রতিদিনে লিখতেন বাই নেমে তার কলাম। তার কলামের গুরুত্ব ছিল জাতীয় পর্যায়ে ম্যাসেজ।

অনেকেই আছেন ঢাকায় অনেক সিনিয়র সাংবাদিক কিন্তুু লিখেন না। সেখানে পীব হাবিব ব্যাতিক্রম। তার রাজনৈতিক কলাম অনেকের জন্য্ ছিল হুসিয়ারী। তিনি বাংলাবাজার ও যুগান্তরে যখন সিরিয়াস লিখতেন তখন দেশের তারকা রাজনীতিবিদরা ভয় পেতেন। তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে ছিলেন সুপার স্টার। তৃতীয় মাত্রায় বা অন্যান্য টিভির টক শো গুলো তাকে অধিক গুরুত্ব দিত। স্পস্টবাসী একজন নিরেট খাঁটি সাংবাদিক।

সিলেট থেকে যে ক’জন সাংবাদিক ঢাকায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন তার মধ্যে পীর হাবিব সামনের সারির। পীর হাবিবের ভাই সুনামগঞ্জের একাধিকবারের সংসাদ সদস্য্ পীর মিসবাহ ভাইকে (পীর হাবিব) বাঁচানোর জন্য সবই করেছেন। তারপরও তিনি চলে গেলেন, তার লাশের গাড়ীর পেছনে তার সহকারীর্মিরা দৌড়াচ্ছে, চোখের পানি ফেলছে। কিন্তুু তিনি দেখতে পারছেন না। গাড়ীটা তাকে নিয়ে ছুটছে জোসনার শহর সুনামগঞ্জে। সেখানে কান্নার শব্দে আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে। এই কলমবীরের প্রতি আমাদের শ্রদ্বা ভালবাসা ফুলের ডালিতে নয় বুকের ভেতরে জমা।

(লেখক : প্রবাসী সাংবাদিক।)

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ