দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণে হতাহতের ঘটনার মধ্যে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছেন শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। মিয়ানমার থেকে আসা গোলায় এক কিশোর নিহতের ঘটনার তিন দিনের মাথায় সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের কোণাপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সর্দার (মাঝি) দিল মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি মেইল যোগে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে কমিউনিটি নেতা মো. আরিফ জানান। মাঝি দিল মোহাম্মদ বলেন, আমরা চিঠিতে জাতিসংঘকে জানিয়েছি, সামরিক জান্তা বাহিনী যেকোনো মুহূর্তে আমাদের ওপর আরও বড় আক্রমণ করতে পারে।
এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে শূন্যরেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান দিল মোহাম্মদ। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসা ৬২১টি পরিবারের চার হাজার ২০০ রোহিঙ্গা এখনও তুমব্রু সীমান্তের কোণাপাড়ার শূণ্যরেখার আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছে। তাদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর দ্যা রেড ক্রস (আইসিআরসি)।
শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে আসা গোলার সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরিত হয়। এতে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে সকালে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ‘মাইন’ বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি যুবকের পা উড়ে যায়। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের নিক্ষিপ্ত গোলা বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়ে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত না হাওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু শুক্রবার রাতের এ ঘটনার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়।
এর মধ্যেই শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার দাবিতে জাতিসংঘে চিঠি দিল। চিঠিতে ২০১৭ সালে জন্মভূমি থেকে নির্যাতিত হয়ে বিতাড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ্য করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এখনও হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, এর জন্য ইচ্ছে করেই শূন্যরেখায় মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে একজনের মৃত্যু ও পাঁচজন আহত হয়েছে।